চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। ৪০ দিনের অভিযান সফল। এর পরেই বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে এসেছে রোভার প্রজ্ঞান। বিক্রমের অবতরণের ১৪ ঘণ্টা পর এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) পোস্ট করে এই খবর জানাল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। বিক্রমের পেটের কাছের দরজাটি খুলে সেখান থেকে ঢালু পথ বেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে আসে প্রজ্ঞান। চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে এই রোভারই কাজ করবে।
প্রজ্ঞানের ছ’টি চাকা। এর গতি খুবই কম, সেকেন্ডে এক সেন্টিমিটার মাত্র। ছয় চাকায় ভর করে এই গতিতেই চাঁদের বুকে ঘুরে বেড়াবে প্রজ্ঞান। বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, চাঁদে ‘আসল’ কাজ করবে এই প্রজ্ঞানই।
বিক্রম যখন চাঁদে নেমেছে, তখন সেখানে সবে ভোর হয়েছে। ভোরের আলো ফোটার কিছু পরেই বিক্রমের দরজা খুলে গিয়েছে। তার পেট থেকে বেরিয়ে এসেছে প্রজ্ঞান। আগামী ১৪ দিন রোভারটি চাঁদে কাজ করবে। এর শক্তির উৎস সূর্য। সোলার পাওয়ারেই গুটি গুটি পায়ে হাঁটাচলা করবে প্রজ্ঞান। চাঁদে সূর্য ডুবে গেলে প্রজ্ঞানেরও কাজ শেষ। কারণ, সূর্যের আলো না থাকলে তার কোনও শক্তি আর অবশিষ্ট থাকবে না।
হিসাব মতো, চাঁদে এক দিন সম্পূর্ণ হতে পৃথিবীর হিসাবে সময় লাগে প্রায় ২৮ দিন। অর্থাৎ, চাঁদের এক বেলা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান। এই ১৪ দিনই চাঁদে কাজ করতে পারবে প্রজ্ঞান। সেই অনুযায়ী সমস্ত পরিকল্পনা করেছে ইসরো।
প্রজ্ঞানের সঙ্গে রয়েছে একাধিক দিকনির্দেশক স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা। চাঁদের মাটিতে অনুসন্ধান চালাবে সে। চাঁদের মাটিতে এই প্রজ্ঞানই এঁকে দেবে ভারতের জাতীয় পতাকা এবং ইসরোর লোগো। প্রজ্ঞান চাঁদ থেকে যা যা তথ্যসংগ্রহ করবে, তার সব কিছুই পাঠিয়ে দেবে ল্যান্ডার বিক্রমে। বিক্রম সেই বার্তা পাঠাবে পৃথিবীতে।
একাধিক বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি নিয়ে চাঁদে নেমেছে প্রজ্ঞান। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চাঁদের ভূমিরূপ কী ভাবে তৈরি হয়েছে, কোন কোন উপাদান দিয়ে চাঁদের মাটি তৈরি, তা খতিয়ে দেখে বার্তা পাঠাবে রোভারটি। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে স্পেকট্রোমিটার বিশ্লেষণের মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে কোন ধরনের খনিজ বস্তু আছে, তা খুঁটিয়ে দেখবে সে। এই সমস্ত পরীক্ষাগুলি করার জন্য ল্যান্ডার এবং রোভারের সঙ্গে রয়েছে পাঁচটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি।