ঠিক করলেন দাদা? ‘ম্যাচ’ জেতা প্রসূনের ‘অদ্ভুত’ ব্যবহারে অভিমানী মনোজ, ছাড়লেন ভিডিয়ো-গুগলি

আবার হাওড়া তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলের আভাস। এ বার চতুর্থ বারের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন শিবপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাক্তন ফুটবলার-সাংসদ প্রসূনের উদ্দেশে ক্রিকেটার-মন্ত্রী মনোজের মন্তব্য, ‘‘আপনাকে যতটা সম্মান করতাম, আর হয়তো ততটা করতে পারব না।’’

মনোজের অভিযোগ, হাওড়া থেকে চতুর্থ বার প্রার্থী হওয়া নিয়ে দলের অন্দরে বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়েছিলেন প্রসূন। তখন তিনি সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এমনকি, তাঁর কেন্দ্র থেকে প্রসূন ভাল লিড পেয়েছেন। কিন্তু ভোটের ফল বেরোনোর পর এক বারও সাংসদ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ফোন করেননি। কিন্তু, অন্যদের সঙ্গে জয়ের আনন্দ উপভোগ করছেন। এতে শিবপুরের তৃণমূল কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরল বলে দাবি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক।

ভিডিয়োবার্তায় প্রসূনের উদ্দেশে মনোজ বলেন, ‘‘জেতার পরে আপনি আমায় এক বার ফোন করে অভিনন্দন জানাননি। দেখা করেননি। অথচ শিবপুর কেন্দ্রে আপনাকে হারানোর জন্য দলের একাংশই আপনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল। আপনি তাঁদের সঙ্গে দেখা করছেন! ফুলের মালা পরে ছবি তুলছেন! এটা জেনে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। দুঃখ পেয়েছি।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘সব চক্রান্ত ব্যর্থ করে এই কেন্দ্রে আপনাকে জয়ী করিয়েছি। মনোজ তিওয়ারিকে দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে ছোট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দলের অনেক নেতা-কর্মী। তাঁরা চাননি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ও টিকিট পান। আমরা আপনাকে জিতিয়েছি। আর আপনি আমাদের ভুলে গিয়ে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর কাছ থেকে সংবর্ধনা নিচ্ছেন! তাই আপনাকে আর ততটা সম্মান করতে পারব না।’’

এ নিয়ে প্রসূনের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। তবে ইতিমধ্যে হাওড়ার তৃণমূলের অন্দরে শোরগোল শুরু হয়েছে। মনোজের বার্তা নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। যদিও প্রকাশ্যে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এই নিয়ে চার বার সাংসদ হলেন প্রসূন। যদিও এ বারের নিবার্চনে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই দলে বিরোধিতার বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। অনেক কর্মী গোড়ার দিকে প্রচারেও নামেননি। পরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়ায় একাধিক সভা এবং রোড-শো করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, এই দু’জনের উপস্থিতি দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করে তোলে। আর প্রসূন গত বারের থেকে ব্যবধান বাড়িয়ে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ভোটে জয়যুক্ত হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.