ইয়াসের মোকাবিলায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বিশেষ নজর রয়েছে তাদের। ইতিমধ্যেই সেখানে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখেই ইয়াস-এর মোকাবিলা করা হবে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পৌঁছেছে ৪ কোম্পানি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)।
আগামী ২৬ মে অর্থাৎ বুধবার আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এমনটাই মনে করছেন আবহবিদরা। শনিবার কাকদ্বীপে প্রশাসনিক আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক পি উলগনাথন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, কাকদ্বীপের বিধায়ক তথা প্রাক্তন সুন্দরবন মন্ত্রী তথা মন্টুরাম পাখিরা, ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা। ছিলেন উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং মৎস্যজীবী ইউনিয়নের কর্মকর্তারাও। জেলাশাসক পি উলগানাথন পরে বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খোলা হচ্ছে একাধিক কন্ট্রোলরুম।’’ পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজর রাখার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ডায়মন্ড হারবার, সাগর, কাকদ্বীপ এবং গোসাবাতে পৌঁছে গিয়েছে এনডিআরএফ। শনিবার সকাল থেকে উপকূলবর্তী এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্ক করে দেন বাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা স্পিড বোট নিয়ে নদী এবং সমুদ্রেও নজরদারি চালান। আগামী দু’দিনের মধ্যে এনডিআরএফের আরও বাহিনী আসবে বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। সাধারণ মানুষকে আশ্বাস দিয়ে এনডিআরএফের ইনস্পেক্টর সন্দীপ কুমার বলেন, ‘‘যে কোনও বিপর্যয়েই আমরা দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাতে প্রস্তুত। আমরা আমপানের সময়ও কাজ করেছিলাম।’’
জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় ইতিমধ্যেই কুলতলি, সাগর, রায়দিঘি, গোসাবা এবং পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন এলাকার বাঁধগুলিতে মেরামতির কাজ চলছে। প্রতিটি ব্লকে খাবার, ওষুধ, ত্রিপল এবং পানীয় জল মজুতও করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র এবং ফ্লাড সেন্টারগুলিতে চলছে জীবাণুমুক্ত করার কাজ। দূর যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। কর্তব্যরত আধিকারিকদের সঙ্গে স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে রাখা হচ্ছে যোগাযোগ। বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের জন্য থাকছে আরটি মোবাইল৷ কাজে লাগানো হবে হ্যাম রেডিও-ও।