Cyber Crime: ব্যাংক KYC-র নামে OTP চাইলে সাবধান! ফের সিউড়িতে মোটা টাকা প্রতারিত ব্যবসায়ী…

ব্যাংক KYC-র নাম করে জালিয়াতি। সিউড়ির এক ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৮০০০ টাকা উধাও করে দিল জালিয়াতরা। শুক্রবার সকালে সিউড়ির রামকৃষ্ণ সাহা নামের ওই ব্যবসায়ীর কাছে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনে ওই ব্যক্তিকে বলা হয়, তাঁর KYC করা না থাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। আর অ্যাকাউন্ট স্বাভাবিক রাখতে গেলে, তাঁর ফোনে আসা ওটিপি জানাতে হবে!

ওই অচেনা ব্যক্তির কথা বিশ্বাস করে ফোনে আসা ওটিপি জানিয়ে দেন রামকৃষ্ণ বাবু। আর এতেই জালিয়াতদের পাতা ফাঁদে পড়ে যান রামকৃষ্ণ সাহা। এরপরই দুপুর ১২.০২ এবং ১২.০৫ মিনিটে ২ বার তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০০০০ এবং ৬৮০০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। জালিয়াতির শিকার হয়েছেন বুঝে দ্রুত ব্যাংকে যান রামকৃষ্ণ বাবু। কিন্তু ব্যাংক বন্ধ থাকায় সেখানেও কোনও সুরাহা হয়নি। এরপরই সিউড়ির সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন তিনি। সেখানে লিখিত অভিযোগ জানান রামকৃষ্ণ বাবু। সাইবার ক্রাইম থানার তরফে থেকে গোটা বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবারই KYC আপডেট করার নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন উত্তরপাড়ার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। এক ফোনে কয়েক লাখ টাকা খোয়ান বৃদ্ধ। কেওয়াইসি আপডেট করার নামে ফোন করা হয় ওই বৃদ্ধকে। তারপরই ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জালিয়াতির শিকার হন উত্তরপাড়া ভদ্রকালীর ৮৯ রামলাল দত্ত রোডের বাসিন্দা প্রভাত কুমার সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের অডিট বিভাগের প্রাক্তন কর্মী তিনি। উত্তরপাড়ারই একটি ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে তাঁর। এই ঘটনায় উত্তরপাড়া থানায় এবং চন্দননগর পুলিসের সাইবার বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

তাঁর অভিযোগ, ব্যাংকের কর্মী পরিচয় দিয়ে তাঁকে একজন ফোন করেন। বলা হয় কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে। আরও বলা হয়, একটা ওটিপি গিয়েছে, সেটা বলতে। বৃদ্ধ প্রথমে ওটিপি দিতে অস্বীকার করেন। প্রতারক তাঁকে বোঝায় যে ওটিপি না দিলে কেওয়াইসি আপডেট হবে না। সেক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর তিনি ওটিপি দিতে থাকেন। আর এই সুযোগেই আর পর পর ৪ বারে মোট ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৭৩৯ টাকা গায়েব হয়ে যায়। তিনি প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরেই ব্যাংকে গিয়ে বিষয়টি জানান। ব্যাংক পুলিসে অভিযোগ দায়ের করতে বলে। 

তবে এই একটা বা দুটো ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মাঝে মাঝেই সামনে আসে এধরনের জালিয়াতির ঘটনা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী এই KYC? চলুন জেনে নেওয়া যাক। KYC-র ফুল ফর্ম হল Know Your Customer। বাংলা ভাষায় যার তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘আপনার গ্রাহককে জানুন।’ কেওয়াইসির মাধ্যমে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের গ্রাহকদের নাম, ঠিকানা, সহ পূর্ণাঙ্গ পরিচয় সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে রাখে। এই KYC-র মাধ্যমে ব্যাংক বা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের পরিচয় যাচাই করতে পারে। অর্থ পাচার এবং অন্যান্য জালিয়াতিমূলক কার্যকলাপ রোধ করার জন্য ২০০৩ সালে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এই KYC লাঘু করে। 

KYC-র ক্ষেত্রে পরিচয় প্রমাণ হিসেবে দিতে হয়, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারি সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত ছবি সহ কোনও আইডি কার্ড। ঠিকানা প্রমাণ হিসেবে দিতে হয় ইলেকট্রিক বিল, ল্যান্ডফোন বা পোস্টপেইড ফোনের বিল, ভাড়ার চুক্তি, রেশন কার্ড ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.