বার্মিংহামে আরও একটি পদক এল বৃহস্পতিবার অ্যাথলেটিক্সে। লং জাম্পে পুরুষদের মধ্যে ভারতের প্রথম রুপো জিতলেন মুরলী শ্রীশঙ্কর। ২৩ বছর বয়সি শ্রীশঙ্কর তাঁর পঞ্চম প্রয়াসে ৮.০৮ মিটার লাফিয়ে রুপো নিশ্চিত করে ফেলেন। সোনা পান বাহামাসের লাকুয়ান নাইর্ন। তিনিও ৮.০৮ মিটার লাফান। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় সেরা লাফ ৭.৯৮। শ্রীশঙ্করের দ্বিতীয় সেরা ৭.৮৪। তাই নিয়ম অনুযায়ী শ্রীশঙ্কর পান রুপো। আর এক ভারতীয় মহম্মদ আনিস ইয়াহিয়া পঞ্চম হন ৭.৯৭ মিটার লাফিয়ে। ভারতের পুরুষদের মধ্যে এর আগে ১৯৭৮ সালে সুরেশ বাবু ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন কমনওয়েলথ গেমসে। মেয়েদের মধ্যে অবশ্য ২০১০ সালে প্রাজুশা মালিয়ক্কল রুপো পেয়েছেন এবং ২০০২ সালে অঞ্জু ববি জর্জ পান ব্রোঞ্জ।
এ দিন, বক্সাররাও ভারতের সাতটি পদক নিশ্চিত করে ফেললেন। একই সঙ্গে স্কোয়াশ, অ্যাথলেটিক্সেও এগোলেন ভারতীয় খেলোয়াড়েরা। তবে তার আগে বুধবার পুরুষদের হাই জাম্পে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ভারতের তেজস্বীন শঙ্কর। জাতীয় রেকর্ড প্রাপ্ত তেজস্বীন ফাইনালে ২.২২ মিটার লাফ দিয়ে তৃতীয় স্থানে পৌঁছন। সেই বিভাগেই সোনা পেয়েছেন নিউজ়িল্যান্ডের হ্যামিশ কের। দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ার ব্রেন্ডন স্টার্ক। পদক জিতে তেজস্বীন বলেছেন, ‘‘সত্যি অনেক বড় যাত্রা। শুরুতে আমি সুযোগ পাইনি। আমার নাম যোগ করা হয় শেষের দিকে। আমার কাছে এই পদক জয় সত্যি রূপকথার মতো। তবে পদক নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারব, সেটাই সব চেয়ে ভাল লাগছে।’’ এ বারের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে তেজস্বীনের সৌজন্যেই প্রথম পদক এল ভারতের।
দুরন্ত: হাই জাম্পে ব্রোঞ্জ জয়ের উচ্ছ্বাস তেজস্বীনের।
ছবি পিটিআই।
এগোচ্ছেন বক্সাররা: বক্সিংয়ে পুরুষদের ফ্লাইওয়েট বিভাগের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে স্কটল্যান্ডের লেনন মুলিগানকে হারিয়ে শেষ চারে অমিত পঙ্ঘাল। একই দিনে বক্সিংয়ে ভারতের পঞ্চম পদক নিশ্চিত করলেন ভারতের জ্যাসমিন লাম্বোরিয়া। ষষ্ঠ পদক নিশ্চিত হল সাগর আহলাওয়াতের সৌজন্যে। বৃহস্পতিবার নিশ্চিত হয়ে গেল সপ্তম পদকও। ৬৭ কেজি বিভাগের সেমিফাইনালে উঠলেন রোহিত টোকাস। বক্সিংয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানের ম্যাচ হয় না। তাই শেষ চারে ওঠা মানেই অন্তত ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত হওয়া। গোল্ড কোস্টে রুপো পেয়ে দেশে ফিরেছিলেন অমিত। কিন্তু এ বার সোনা পেতে তিনি মরিয়া। শেষ আটে ৫-০ হারিয়েছেন স্কটল্যান্ডের লেননকে। শেষ চারে তিনি কার বিরুদ্ধে লড়বেন তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। মেয়েদের ৬০ কেজি বিভাগের কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজ়িল্যান্ডের ট্রয় গার্টনকে ৪-১ পয়েন্টে হারিয়েছেন জ্যাসমিন। শেষ চারে ওঠায় পদক নিশ্চিত হয়েছে তাঁরও। ৯২ কেজি বিভাগে সাগর ৫-০ হারালেন অ্যাগনেসকে। রোহিত ৫-০ হারিয়েছেন জ়েভিয়ার মাতাফাকে।
শেষ আটে দীপিকা-সৌরভ: দীপিকা পাল্লিকাল কার্তিক ও বাংলার সৌরভ ঘোষালের জুটি মিক্সড ডাবলস বিভাগের শেষ আটে পৌঁছে গেল। তারা ওয়েলসের এমিলি হুইটলক ও পিটার ক্রিডের জুটিকে হারাল ১১-৮, ১১-৪ ফলে। দীনেশ কার্তিকের স্ত্রী দীপিকা দুই সন্তানের মা। কিন্তু মাতৃত্ব বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাঁর খেলোয়াড় জীবনে। দীপিকার এই উন্নতির নেপথ্যে কার্তিকের উৎসাহও যে কম নেই তা অস্বীকার করেন না দীপিকা। পাশাপাশি মেয়েদের ডাবলস বিভাগে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেলেন সুনয়না কুরুভিল্লা ও অহনত সিংহ। সুনয়না ও ১৪ বছরের অহনত এ দিন হারিয়েছেন ইয়েহেনি কুরুপ্পু ও চানিতমা সিনালিকে। ১১-৯, ১১-৪ পয়েন্টে জেতে ভারতীয় জুটি। মেয়েদের ডাবলসেও কোয়ার্টার ফাইনালে দীপিকা-জোৎস্না চিনাপ্পা জুটি।
সেমিফাইনালে হিমা: মেয়েদের ২০০ মিটার দৌড়ে সেমিফাইনালে উঠলেন হিমা দাস। কমনওয়েলথ গেমসের হিটে এ দিন ২৩.৪২ সেকেন্ডে দু’শো মিটারের দৌড় শেষ করেন তিনি। পাঁচ জনের হিটে হিমাই প্রথম হিসেবে দৌড় শেষ করেন। তবে ফাইনালে পৌঁছনোর রাস্তা এখনও পরিষ্কার নয়। হিমা ফাইনালে পৌঁছতে পারেন কি না সেটাই দেখার।
শেষ ষোলোয় মণিকা: টেবল টেনিসে মেয়েদের সিঙ্গলসে প্রি-কোয়ার্টারে উঠলেন মণিকা বাত্রা, সৃজা আকুলা ও রীত রিশিয়া।