অবশেষে জলসঙ্কট মিটল শিলিগুড়ির পুর এলাকায়। মেয়র গৌতম দেবের পূর্ব ঘোষণা মতোই ২ জুন অর্থাৎ রবিবার বিকেল থেকে পানীয় জল সরবরাহ শুরু করেছে পুরসভা।
পুরসভা জানিয়েছে, তিস্তার বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ। শনিবার বিকেলেই তিস্তা থেকে জল ছেড়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর (পিএইচই)। সেই জল পরিস্রুত করে পানযোগ্য করে তুলে রবিবার বিকেল থেকেই ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়েছে। রবিবার পুরসভার কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন গৌতম। সেখানে জলের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে শহরকে ঘিরে থাকা নদীগুলিকে দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানান মেয়র। তাঁর বক্তব্য, সঙ্কটের সময় মহানন্দার জলকে পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করতে চাইলেও, তা মাঝপথেই থমকে যায়। তার অন্যতম কারণ— নদী দূষণ। কাজেই শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া মহানন্দা, জোড়াপানি, ফুলেশ্বরী, সাহু নদীকেও দূষণমুক্ত করা হবে।
গৌতম জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি(পিএইচই) ও সেচ দফতরের বৈঠক হয়েছে। পিএইচই জানিয়েছে, তিস্তা থেকে জল উত্তোলন করে তা পরিস্রুত করার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ। পরিশোধিত জল এখন পানের যোগ্য। মেয়র বলেন, ‘‘জরুরি পরিস্থিতিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরসভার ৪৭ জন কাউন্সিলর-সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই জলসঙ্কটের জন্য মানুষের যে কষ্ট হয়েছে, এর দায় আমরা নিচ্ছি।’’
মেয়রের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘জল চালু হলেও এখানেও বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে। জলের গুণগত মান কেমন, বিওডি-র পরিমাণ ঠিক রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ অনেকেই প্রকাশ করছেন। আশা রাখি, মেয়র সাহেব পরিশুদ্ধ জলই মানুষকে পান করাচ্ছেন। যদি কোথাও দুর্বলতা থেকে থাকে, সেটা দূর করার জন্যেও যেন মেয়র সাহেব উদ্যোগী হন। তবে আমরা অবশ্যই আদালতে যাব। যে গাফিলতির নজির তৈরি হয়েছে, তা মানা যায় না।’’
সাংবাদিক বৈঠকে গৌতম জানিয়েছেন, জোড়াপানি, ফুলেশ্বরী, পঞ্চানই নদী সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ছোট-বড় ১৮-১৯টি সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে এর মধ্যে। নদী থেকে মাটি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও নদীকে দূষণমুক্ত করতে নদী থেকে খাটাল সরানোর কাজ শুরু হবে। তৈরি হবে কমিউনিটি শৌচাগার।