অ্যাপ বাইকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট। রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলিকে। অর্থাৎ, ‘ব্যক্তিগত’ কোনও নম্বর প্লেট যুক্ত মোটরসাইকেল, স্কুটার বা মোটরবাইককে ‘অ্যাপ বাইক’ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য রাজ্যের জেলায় জেলায় বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হবে। সেই সব শিবির থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যাবে।
মঙ্গলবার অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। সেই বৈঠকেই দীর্ঘ আলোচনার পর অ্যাপ বাইক সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। এতদিন বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট যুক্ত বাইকের পাশাপাশি ব্যক্তিগত নম্বর প্লেটের বাইকও অ্যাপ পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। অর্থাৎ, যে কেউ তাঁর ব্যক্তিগত দ্বিচক্রযান নিয়ে ওই পেশায় যোগ দিতে পারতেন। কিন্তু এখন সেটির বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।
এতদিন এই পরিষেবায় বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট ‘বাধ্যতামূলক’ ছিল না। পরিবহণ দফতরের সিদ্ধান্তের ফলে বাণিজ্যিক নম্বর প্লেটের বাইক ছাড়া আর কোনও ধরনের বাইক এই পরিষেবা দিতে পারবে না। পরিবহণ দফতরের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যে কমবেশি প্রায় ৩০ হাজার বাইক এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। যার বড় অংশের কাছেই বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট নেই। ব্যক্তিগত বাইকের নম্বর প্লেট দিয়েই অ্যাপ বাইক পরিষেবায় যুক্ত হয়েছেন সেগুলির মালিকেরা। যুব সম্প্রদায়ের বড় অংশের কর্মসংস্থান হয়েছে তার মাধ্যমেই। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে ওই বাইকগুলির বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট বাধ্যতামূলক হবে।
পরিবহণ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ব্যক্তিগত বাইকে বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট লাগানোর জন্য জেলায় জেলায় বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হবে। সেই সব শিবির থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যাবে। এতদিন বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন যুক্ত বাইকচালকরা শুধু তিনটি জেলার মধ্যে পরিষেবা দিতে পারতেন। কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া সদর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার শহরাঞ্চলে এই পরিষেবা পাওয়া যেত। এই জেলাগুলিতে বাণিজ্যিক নম্বর প্লেটের পাশাপাশি ব্যক্তিগত বাইকও পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ বার থেকে সেই সীমা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচটি জেলা করা হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনার সঙ্গে হুগলি জেলাতেও এই পরিষেবা পাওয়া যাবে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবহণ দফতরের রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি পাবে।’
উল্লেখ্য, বাণিজ্যিক লাইসেন্সের জন্য দিল্লিতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অ্যাপ বাইক পরিষেবা। কিন্তু কলকাতা ও তার লাগোয়া শহরতলিতে অ্যাপ বাইক পরিষেবা আরও পোক্ত করতে চায় পরিবহণ দফতর। তাই প্রত্যেক জেলায় শিবিরের আয়োজন করে বাইকের মালিকদের বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট লাগানোর সুযোগ দেওয়া হবে।