ভারতের বিপরীত মেরুতে চিন, LAC-কে সরিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জোর দেওয়ার বার্তা

মুখোমুখি বৈঠক হল বটে। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও নড়ল না ভারত এবং চিন। বেজিংয়ের তরফে দাবি করা হল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘাতকে সরিয়ে রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে হবে। নয়াদিল্লির তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, দু’দেশের সম্পর্কের জন্য সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে চিনের দাবি, সার্বিকভাবে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা কমেছে।

গত বুধবার সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলেনের ফাঁকে তাজিকিস্তানের রাজধানীতে বৈঠক করেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেই বৈঠকের বিষয়ে বৃহস্পতিবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, ওয়াং জানিয়েছেন যে গালওয়ান উপত্যকা এবং প্যাংগং লেক এলাকা থেকে দু’দেশেরই সেনা পিছিয়ে গিয়েছে। সার্বিকভাবে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা কমেছে। তবে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে সংঘাতের জন্য চিন যে দায়ী নয়, তাও জানিয়েছেন ওয়াং।

প্রায় ১০ মাসে চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি বৈঠকের পর টুইটারে জয়শংকর বলেছিলেন, ‘ওয়ের্স্টান সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনায় জোর দেওয়া হয়। (চিনকে) জানানো হয়েছে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কোনওরকম একতরফা পরিবর্তন একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুতের ক্ষেত্রে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় সম্পূর্ণ শান্তি এবং সুস্থিতি ফিরিয়ে আনা এবং বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’ সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, উচ্চ পর্যায়ের সামরিক বৈঠক এগিয়ে আনার বিষয়েও একমত হয়েছে নয়াদিল্লি এবং বেজিং।

যদিও চিনা বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘাতকে দূরে সরিয়ে রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার বার্তা দিয়েছেন ওয়াং। তিনি বলেছেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্ত সংঘাততকে উপযুক্ত জায়গায় রাখা উচিত দু’পক্ষের। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব বাড়ানো এবং আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্যের সমাধান করে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত।’

চিনা বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতির প্রেক্ষিতে প্রাক্তন দূত বিষ্ণু প্রকাশ জানিয়েছেন, বেজিংযের তরফে এমন একটি ধারণা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে, যার সঙ্গে ভারতের অবস্থানের থেকে ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টা যেন খানিকটা ভিন্ন দিকে দু’টি নৌকা সমান্তরালভাবে চলছে। কোনও পর্যায়ে (সীমান্তের) অবস্থা স্বাভাবিক (২০২০ সালের এপ্রিলের আগের অবস্থান) করার বিষয়ে সহমত হয়নি চিন। ওরা বরাবর বলে আসছে যে সার্বিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না সীমান্ত সমস্যা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.