বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনাগুলিকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে বলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না! পড়শি দেশে সংখ্যালঘু-নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ফের এক বার অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত। বুধবার বিকেলে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে আগেও বাংলাদেশের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা কথা হয়েছে ভারতের। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যে ভাবে আচরণ করা হয়, তাঁদের উপর যে নির্মমতার অভিযোগ উঠে আসে, তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে বাংলাদেশকে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনাগুলিকে শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক কারণে’ ঘটেছে বা ‘সংবাদমাধ্যমের অতিশয়োক্তি’ বলে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এই ধরনের নৃশংসতায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের (অন্তর্বর্তী) সরকার পদক্ষেপ করবে বলে আমরা আশা করি।” বস্তুত, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বেশ কিছু অভিযোগ উঠে এসেছে। তা নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অতীতেও বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপের অনুরোধ করেছে ভারত। যদিও ইউনূস প্রশাসন বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিল, সে দেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই রয়েছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য যে তাদের পছন্দ নয়, তা-ও স্পষ্ট করেছিল বাংলাদেশ।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছিল সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের বেশির ভাগ ঘটনাই রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে। পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছিল, গত বছরের ৫ অগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মোট ২৩৭৪টি অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ১২৫৪টি অভিযোগ সে দেশের পুলিশ যাচাই করে দেখেছে। ওই যাচাই করা অভিযোগগুলির মধ্যে ৯৮ শতাংশই রাজনৈতিক কারণে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বুধবার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে, শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক কারণে’ বা ‘সংবাদমাধ্যমের অতিশয়োক্তি’ বলে ঘটনাগুলিকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। গত মাসেও নয়া দিল্লি জানিয়েছিল, ভারত চায় সংখ্যালঘুদের অত্যাচারের অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ না-করে প্রতিটি ঘটনায় বিশদ তদন্ত করুক বাংলাদেশের প্রশাসন।