ভারতের করোনা টিকা তথ্য চুরির ছক কষছে সাইবার অপরাধীরা। ভারতের টিকা প্রস্তুতকারক একাধিক সংস্থা চিন ও রাশিয়ান হ্যাকারদের নজরে। ভারতের একাধিক সংস্থা বর্তমানে করোনার টিকা তৈরির কাজ চালাচ্ছে। সেই সংস্থাগুলির নেটওয়ার্ক থেকেই টিকার তথ্য চুরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হ্যাকাররা। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে টিকা তৈরির তথ্যের গোপনীয় রক্ষা করতে সবরকম পদক্ষেপ নিতে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রে জোরকদমে চলছে টিকাকরণ অভিযান। যদিও করোনা টিকাকরণের তথ্য নথিভুক্তকরণের জন্য তৈরি অ্যাপ কো-উইনে প্রযুক্তিগত কিছু বদল আনতে আজ শনি ও কাল রবিবার দেশে করোনার টিকাকরণ অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। দেশের একাধিক সংস্থা করোনার টিকা তৈরি করছে। আপাতত দুটি সংস্থার টিকা দেশে প্রয়োগ শুরু হলেও শীঘ্রই আরও চার থেকে পাঁচটি ভারতীয় সংস্থার টিকাও দেশবাসীকে দেওয়ার তৎপরতা শুরু করে দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে।
এরই মধ্যে উঠে এল ভারতীয় সংস্থার টিকা তৈরির তথ্য চুরির চেষ্টার অভিযোগ। চিন ও রাশিয়ার হ্যাকাররা বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংস্থার নেটওয়ার্ক থেকে করোনা টিকার তথ্য চুরির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইন্টেল ফার্মের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, হ্যাকাররা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া, ভারত বায়োটেক, পতঞ্জলি এবং অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইএমএস)-কে তাদের নিশানা করেছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারতের করোনা টিকার তথ্য চুরি করতে ১৫টি হ্যাকিং চক্র সক্রিয় রয়েছে। হ্যাকাররা রোগীদের তথ্য, কোভিড-19 ভ্যাকসিন গবেষণার তথ্য, ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ডেটা এবং টিকা সরবরাহের চেইনের তথ্য চুরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারত ছাড়াও জাপান, আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, ইতালি ও জার্মানি-সহ ১২টি দেশ হ্যাকারদের নিশানায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে করোনার টিকাকরণ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম পর্বে দেশের ৩ কোটি ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারককে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স-সহ সব স্বাস্থ্যকর্মী, দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ভোটকর্মীদেরও এখন করোনার টিকা দেওয়া চলছে। ১ মার্চ থেকে দেশজুড়ে শুরু করোনার দ্বিতীয় পর্বের টিকাকরণ অভিযান। এই পর্বে মূলত তিনটি ধাপে টিকাকরণ চলবে। আগাম স্ব-নিবন্ধন, সাইটে নিবন্ধকরণ এবং তারপর ভ্যাক্সিন গ্রহণ। দেশজুড়ে ১ মার্চ থেকে শুরু হবে করোনার দ্বিতীয় পর্বের টিকাকরণ অভিযান।
এই পর্যায়ে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিক ও ৪৫ বছরের উপরের বয়সী যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের টিকা দেওয়া হবে। টিকাকরণের এই পর্যায়ে পঞ্চাশোর্ধও নাগরিকদেরও রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সরকারি টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতে বিনামূল্যে করোনার টিকা মিলবে। তবে প্রাইভেট হাসপাতালগুলি থেকে টিকা নিতে গেলে আগে থেকে নির্ধারিত খরচ দিতে হবে।