সিবিআই যখন গরু পাচারে জড়িতদের খুঁজছে, তখনই গরু পাচারের একটি মামলার তদন্তে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ঘুরে গেলেন সিআইডি-র অফিসারেরা।
রঘুনাথগঞ্জ ও সুতি থানার বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে যায় সিআইডি-র একটি দল। পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েতের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এলাকার গরু রাখার খোঁয়াড়গুলি নিয়ে। পরে তাঁদের মালদহতে সিআইডি-র দফতরে হাজির হতে বলা হয়। সেই মতো ওই পঞ্চায়েতগুলির প্রধান ও কর্মীরা খোঁয়াড় সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র সহ হাজির হন মালদহে। খোঁয়াড় মালিকদেরও ডেকে পাঠানো হয় সেখানে। ২০১৮ সালের আগের পাঁচ বছরে কারা কত টাকায় খোঁয়াড়ের ইজারা নিয়েছিলেন, এই সময় কত গরু ছিল খোঁয়াড়ে, কারা গরু রেখেছিলেন, সেগুলি কোথায় গেল, এই সময়ের মধ্যে কত গরু মারা গিয়েছে এমন যাবতীয় বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁদের।
সীমান্ত লাগোয়া বড়শিমুল দয়ারামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের বেলিয়ারা বিবির স্বামী মনিরুল ইসলাম বলেন, “সিআইডি অফিসারেরা এসেছিলেন। খোঁয়াড় সম্পর্কে নথিপত্র দেখে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে সকলকে দেখা করতে বলে যান নোটিস পাঠিয়ে। আমরা দেখা করে যা তথ্য ছিল সবই জানিয়েছি।” জোতকমল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাণী রায়ের স্বামী নিমাই রায়ও একই কথা বলেন।
সূত্রের খবর, আগে আইনি বিধান ছিল, বিএসএফ বা পুলিশ, যাদের হাতেই পাচারের গরু ধরা পড়ুক, তা সরাসরি কেন্দ্রীয় শুল্ক মন্ত্রকের (কাস্টমস) কাছে হস্তান্তরিত করতে হবে। শুল্ক মন্ত্রকের স্থানীয় অফিস তা নিলাম করবে। কিন্তু অভিযোগ ছিল, শুল্ক দফতর থেকে সেই সব গরু নিলামে ফের পাচারকারীরাই অতি সস্তায় বেনামে কিনেনিচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায় একটি গোপালক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের অভিযোগ ছিল, পাচারের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশ ৩৭৯, ৪১১ ধারায় মামলা রুজু করলেও, পশু নির্যাতনের ধারায় মামলা রুজু হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্ট আটক করা গরুর নিলাম বন্ধের নির্দেশ দেয়।
এর পর থেকেই বিএসএফ পাচারের গরু আটক করলে সব পুলিশের কাছে জমা দিতে শুরু করে। পুলিশ গরুগুলিকে বিভিন্ন এলাকার খোঁয়াড়ে রাখত। দীর্ঘ দিন ধরে খোঁয়াড়ে থাকায় গরুর খাবার জোগাতে বেকায়দায় পড়েন খোঁয়াড় মালিকেরা। অভিযোগ, তখন দাবি করা হয়, বহু সংখ্যক গরু মারা পড়েছে। সূত্রের খবর, তা খতিয়ে দেখতেই তদন্তে নেমেছে সিআইডি।
ইতিমধ্যে সিবিআই-ও মুর্শিদাবাদে গরু পাচারের তদন্তে আসতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।