উৎসবের মরসুমে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে। অনেকেই যখন লম্বা সফরে পা বাড়ানোর পথে তখন ট্রেনের প্যান্ট্রিকারের খাবার নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হলো আইআরসিটিসি-কে। মুম্বই লোকমান্য তিলক মারগাও এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রি কারের ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে এক যাত্রী লিখেছেন ‘‘যাত্রীদের সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করার জন্য রেল ইঁদুরদের খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করার জন্য নিয়োগ করেছে।’’
গত ১৫ অক্টোবর ট্রেনে সফর করা ওই যাত্রীর শেয়ার করা ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে প্যান্ট্রিকারে কেটে রাখা গাজর, বিটের মতো বিভিন্ন আনাজ ছাড়াও রান্নার বাসনের উপরে ঘুরছে পেল্লায় আকারের একাধিক ইঁদুর।
বহু দূরপাল্লার ট্রেনের বাতানুকূল শ্রেণিতে প্রাতরাশে সেদ্ধ আনাজ, মাখন এবং রুটি দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে আনাজ বিশিষ্ট ওমলেটও দেওয়া হয়। ছবিতে যে ভাবে কেটে রাখা আনাজের চারপাশে ইঁদুর ঘুরতে দেখা গিয়েছে৷ তা দেখে শিউরে উঠছেন অনেকেই। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে ওই ছবি নিয়ে রেলের অভ্যন্তরেও শোরগোল পড়েছে।
তবে সমাজমাধ্যমে ওই ভিডিয়ো পোস্ট করার আগে এমন দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠা যাত্রীর এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে অভিজ্ঞতা বিশেষ সুখের হয়নি। অবস্থা দেখে তিনি প্রথমে বিষয়টি ওই ট্রেনের এক আরপিএফ কর্মীকে জানান। কিন্তু সব শুনে ওই রক্ষী উল্টে অম্লান
বদনে বলেন, ‘‘রেলের ট্র্যাকে শয়ে শয়ে ইঁদুর ঘোরে, এখানে তার থেকে দু’-চারটে এসে পড়লে তা নিয়ে কী বলব?’’ এর পরে এক প্যান্ট্রিকর্মীকে ডেকে তিনি ঘটনার কথা বলেন এবং ভিডিয়ো দেখান। ওই কর্মী সব দেখে কাতর কণ্ঠে জানান, তিনি নিরুপায়, ইঁদুর ঠেকানোর উপায় তাঁর জানা নেই।
এর পর ওই ছবি এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া ছাড়াও রেল মদত অ্যাপেতিনি অভিযোগ জানান। অ্যাপে অভিযোগ জানাতেই রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আই আর সি টি সি কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেন। এর পর নড়ে-চড়ে বসেআইআরসিটিসি (ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম কর্পোরেশন)। সংস্থার পক্ষ থেকে রেল মদতঅ্যাপ এবং এক্স হ্যান্ডলে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই প্যান্ট্রিকার দেখা শোনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও তাঁদের এ বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। ইঁদুর ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, যে ভাবে ওই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তাতে ট্রেনে সফর করা যাত্রীদের মধ্যে পরিবেশন করা খাবার নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। বাতানুকূল শ্রেণীর টিকিটে খাবারের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা গুনে যদি এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়, তাহলে রেলের খাবার কেনার কী অর্থ হয়? অস্বস্তিতে পড়া রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টিকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।