হার্দিক কি আদৌ আইপিএল খেলতে পারবেন? ১৩ বছর আগে জাডেজার নির্বাসন মনে করিয়ে দিয়ে উঠছে প্রশ্ন

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ফিরলেও হার্দিক পাণ্ড্য কি এ বারের আইপিএল খেলতে পারবেন? ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির সঙ্গে চুক্তি নবীকরণ করতে না চাওয়ায় ১৩ বছর আগে নির্বাসিত হয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। আইপিএলের একটি নিয়মের জন্য শাস্তি পেতে পারেন হার্দিকও। আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন ডিরেক্টর জয় ভট্টাচার্য।

বরোদার অলরাউন্ডারের মুম্বইয়ে যোগ দেওয়া নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের মধ্যে উৎসাহের শেষ নেই। যদিও আইপিএলের ‘ট্রেডিং অ্যান্ড অপারেশন’ নিয়ম অনুযায়ী, এক ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি থেকে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে কোনও ক্রিকেটার যেতে পারেন না চুক্তি ভেঙে। মূল নিলাম থেকে কেনা ক্রিকেটারের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির চুক্তি হয় তিন বছরের। প্রথম থেকেই এই নিয়ম রয়েছে আইপিএলে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এর কোনও পরিবর্তন করেনি। কোনও ক্রিকেটার নিয়ম না মানলে হতে পারে শাস্তিও। যদিও হার্দিকের দলবদলের ক্ষেত্রে কোনও আপত্তি করেনি বিসিসিআই।

এই নিয়ম না মানার কারণে ২০১০ সালে শাস্তি পেতে হয়েছিল রবীন্দ্র জাডেজাকে। রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে চুক্তি নবীকরণ করতে না চাননি তিনি। শাস্তি হিসাবে সে বার আইপিএলের গোটা মরসুমের জন্য জাডেজাকে নির্বাসিত করেছিল বিসিসিআই।

জয় বলেছেন, ‘‘হার্দিকের এ ভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি বদল করাটা প্রতিযোগিতার জন্য ভাল হল না। ২০১০ সালে এ ভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি পরিবর্তন করতে চাওয়ায় শাস্তি পেতে হয়েছিল জাডেজাকে। সে বার আইপিএল খেলতে পারেনি জাডেজা। ও বলেছিল রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলতে চায় না। সে সময় আইপিএল কর্তারা বলেছিলেন, ‘কোনও কারণেই নিয়ম অমান্য করা যাবে না। কোনও ক্রিকেটার নিলামে একটি দলে যোগ দেওয়ার পরেও সেই দলের হয়ে খেলতে অস্বীকার করলে মেনে নেওয়া হবে না। এই প্রবণতা সমর্থনযোগ্য নয়। এই ধরনের ঘটনা প্রতিযোগিতায় খারাপ প্রভাব ফেলবে।’’’

এখানেই থামেননি জয়। বিসিসিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেকেআরের প্রাক্তন কর্তা বলেছেন, ‘‘২০১০ সালে যে বিষয়টি বরদাস্ত করা হয়নি, সেই একই ঘটনায় এ বার অন্য এক জনকে কী করে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে! এক বার এই উদাহরণ তৈরি হলে তার সুযোগ নিতে পারে অন্য ক্রিকেটারেরাও। তারা মনে করতে পারে, ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভাল ভাবে ঝগড়া করতে পারলেই পছন্দের দলে চলে যাওয়া যাবে। আমার মতে, হার্দিকের মুম্বইয়ে যোগ দেওয়া আইপিএলের জন্য ভাল হবে না।’’

জয় এই ঘটনার জন্য গুজরাত টাইটান্স এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কর্তৃপক্ষকেও সমান দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গুজরাতের কাছে দু’টি রাস্তা ছিল। প্রথমত, ওরা এমনিই হার্দিককে ছেড়ে দিতে পারত। সেই টাকা দিয়ে নিলাম থেকে অন্য কোনও ভাল ক্রিকেটারকে কিনতে পারত। হার্দিকও আবার নিলামে উঠত। দ্বিতীয়ত, আর এক বছর হার্দিককে ধরে রাখতে পারত। চুক্তি শেষ হলে আগামী বছর এমনিই ছেড়ে দিত। এর কোনও ক্ষেত্রেই অন্তত প্রতিযোগিতায় খারাপ প্রভাব তৈরি হত না।’’

জয়ের মতে সকলের উচিত প্রতিযোগিতার নিয়ম মেনে চলা। ক্রিকেটার, ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি এবং বিসিসিআইয়েরও। একই ধরনের ঘটনায় দু’রকম সিদ্ধান্ত বিসিসিআইয়ের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করবে না বলেই মনে করেন তিনি। তাতে বোর্ডের উপর ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি কর্তৃপক্ষের ভরসা কমতে পারে। যা আগামী দিনে ক্রিকেটারদের সাহসী করে তুলতে পারে চুক্তির মাঝপথে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.