কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে বহু স্মরণীয় ইনিংস খেলেছেন তিনি। বহু ম্যাচে জিতিয়েছেন। বল হাতে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। আজ পর্যন্ত ব্যাট হাতে তিন অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেননি। মঙ্গলবার সেই স্বপ্নও পূরণ হয়ে গেল সুনীল নারাইনের। রাজস্থানের বিরুদ্ধে শতরান করলেন তিনি। আইপিএলে নারাইনের প্রথম শতরান এবং সর্বোচ্চ স্কোর। ১৬তম ওভারে যুজবেন্দ্র চহালকে চার মেরে শতরান করলেন। গ্যালারি থেকে তা দেখে দাঁড়িয়ে কুর্নিশ করলেন দল মালিক শাহরুখ খান। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম এবং বেঙ্কটেশ আয়ারের পর কেকেআরের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসাবে শতরান করলেন নারাইন।
গৌতম গম্ভীর মেন্টর হয়ে আসার পর প্রথম যে কাজটা করেছিলেন, তা হল নারাইনকে ওপেন করতে আনা। তিনি অধিনায়ক থাকার সময়েই প্রথম ওপেন করতে শুরু করেছিলেন নারাইন। কেকেআরেই ওপেন করা শুরু করার পর বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগেও ওপেন করতে শুরু করেন। সেখানে সাফল্য পেলেও আশ্চর্যজনক ভাবে কেকেআরের ওপেনার হিসাবে জায়গা হারিয়ে ফেলেন। গত কয়েক বছর নিয়মিত ওপেনার হিসাবে খেলেননি। এ বার পুরনো স্থানে ফেরার পরে স্বমহিমায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটার।
নারাইনের খেলার মধ্যে একটা শান্ত ভাব লক্ষ করা গিয়েছে মঙ্গলবার। সতীর্থ ওপেনার ফিল সল্ট কম রানে ফিরে যাওয়ার পরে নারাইন অকারণে তাড়াহুড়ো করতে যাননি। যাঁদের মতে, নারাইন সব বলেই চালাতে যান এবং উইকেট দিয়ে আসেন, তাঁদের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকতে পারে এই ইনিংস। ধুমধাড়াক্কা চালিয়ে ২০-৩০ রান করা গেলেও শতরান করা যায় না। রবিচন্দ্রন অশ্বিন যখন ক্রমাগত অফস্টাম্পের বাইরে বল ফেলে নারাইনকে প্রলোভিত করছেন, তখন ক্যারিবিয়ান ব্যাটার শান্ত মাথায় বল ছেড়ে গেলেন। দু’টি ‘ডট’ বল হল। পর ক্ষণেই ছয় মেরে নারাইন বোঝালেন, তাঁকে বোকা বানানো সোজা কথা নয়।
দ্বিতীয় ওভারে আবেশ খানকে চার মেরে শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে একটু হলেও ধীরে খেলছিলেন। ষষ্ঠ ওভার থেকে ধীরে ধীরে চালিয়ে খেলতে শুরু করেন। কুলদীপ সেনকে পর পর ছয় এবং চার মারেন। অষ্টম ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পর পর দু’টি চার মারেন। ২৯ বলে অর্ধশতরান পূরণ করার পর আরও চালিয়ে খেলতে থাকেন নারাইন। ১২তম ওভারে অশ্বিনকে একটি ছয় এবং দু’টি চার মারেন। তবে যে ওভারে তিনি শতরান করেন সেই ওভারেই নারাইনের হিংস্র রূপ দেখা গেল। দু’টি ছয় এবং দু’টি চার মারেন।
আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে কিছু করতে না পারলেও বল হাতে একটাও বাউন্ডারি হজম করেননি। এ দিন ব্যাট হাতে তাণ্ডব দেখালেন। নারাইন প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁকে ধরে রেখে কোনও ভুল করেনি কেকেআর।