পেট্রল, ডিজেলের দাম রোজই বাড়ছে। তার চেয়েও বেশি উদ্বেগের কারণ, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তরোত্তর বাড়াচ্ছে উষ্ণায়নের মাত্রা। এই পরিস্থিতিতে খুব কম খরচায় দূষণমুক্ত জ্বালানি উপাদনের পথ খুঁজে বার করলেন মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি বোম্বে)-র বিজ্ঞানীরা। সেই জ্বালানি হাইড্রোজেন গ্যাস। যা জল থেকে তৈরি করা যায়।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার ইন্ডিয়া’-য়।
বিদ্যুৎপ্রবাহ পাঠিয়ে জলের তড়িৎবিশ্লেষণ করে হাইড্রোজেন গ্যাস বার করার পদ্ধতি আগেই জানা ছিল। সেই পদ্ধতিতে বিশ্বের অনেক দেশেই হাইড্রোজেন তৈরি করে গাড়ি, যানবাহনে তা ব্যবহারও শুরু হয়েছে। জ্বালানি হিসাবে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভরতা ধীরে ধীরে কমাতে।
কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ বিদ্যুৎপ্রবাহের প্রয়োজন হয় বাণিজ্যিক ভাবে হাইড্রোজেন উৎপাদনের প্রক্রিয়া সে ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারণ ওই পদ্ধতিতে তড়িৎদ্বার হিসাবে ব্যবহার করতে হয় প্ল্যটিনাম, রোডিয়াম, ইরিডিয়ামের মতো বহু মূল্যবান ধাতু।
তাই এই চালু পদ্ধতিকে আমজনতার নাগালে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি এত দিন। এ বার সেই পথেরই হদিশ দিলেন বোম্বে আইআইটি-র বিজ্ঞানীরা।
তাঁরা দেখালেন, তুলনায় অনেক কম পরিমাণ বিদ্যুৎপ্রবাহ পাঠিয়েও জলের তড়িৎবিশ্লেষণ করে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন করা যায়। তার জন্য গবেষকরা এমন একটি অণুঘটক আবিষ্কার করেছেন বাইরে থেকে যার উপর চৌম্বক ক্ষেত্র প্রয়োগ করে সেই অণুঘটকের মধ্যে চৌম্বক ধর্ম আনা যায় খুব সহজেই। অণুঘটকটি কোবাল্টের অক্সাইড। প্ল্যটিনাম, রোডিয়াম, ইরিডিয়ামের চেয়ে কোবাল্ট প্রকৃতিতে অনেক বেশি সহজলভ্য। দামেও সস্তা।
শুধু তাই নয়, গবেষকরা দেখেছেন এই পদ্ধতিতে জলের তড়িৎবিশ্লেষণের গতি বেড়েছে তিন গুণ। অনেক বেশি পরিমাণে তৈরি করা যাচ্ছে হাইড্রোজেন,অনেক কম সময়ে।