‘কালীঘাটের কাকু’র ধমনীতে ‘ব্লকেজ’, দিল্লি এমসে চিকিৎসার নথি পাঠিয়ে মতামত জানতে চায় ইডি

‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি দিল্লি এমসে পাঠাতে চায় ইডি। সেখানকার চিকিৎসকদের মতামত জানতে আদালতে আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অন্য দিকে, কলকাতারই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন সুজয়।

বর্তমানে সুজয় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী সেলিম রহমান আদালতে সুজয়ের হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যার কথা জানিয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালতে জানানো হয়েছে, ‘কালীঘাটের কাকু’র ধমনীতে তিনটি ‘ব্লকেজ’ ধরা পড়েছে। ‘বাইপাস সার্জারি’ করা হতে পারে। এর পর তাঁর মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখতে চেয়েছিলেন বিচারক। বিকেলে সেই রিপোর্ট জমা দিয়ে আরও এক বার জামিনের আবেদন করা হয়।

সুজয়ের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চান না। কলকাতাতেই তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের কথা বলেন তিনি। তার মধ্যে যে কোনও একটিতে চিকিৎসা করানোর ইচ্ছা আছে ‘কালীঘাটের কাকু’র। তাঁর আইনজীবী জানান, নিজের পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাইছেন সুজয়। যাতে পরে কারও উপর দোষারোপ করার মতো পরিস্থিতি না তৈরি হয়। মানবিকতার খাতিরে আবেদন মঞ্জুর করার আর্জি জানানো হয়েছে।

অন্য দিকে, ইডি এসএসকেএমে রেখেই সুজয়ের চিকিৎসা করানোয় আগ্রহী। তাদের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে জানান, কলকাতার প্রথম সারির হাসপাতাল এসএসকেএম। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই হাসপাতালের উপর আস্থা রাখেন। তাই এখানকার চিকিৎসার উপর বিশ্বাস হারানোর কোনও কারণ নেই।

সম্প্রতি সুজয়ের স্ত্রীবিয়োগ হয়েছে। স্ত্রীর ক্রিয়াকর্মের জন্য কিছু দিন প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। তার মেয়াদ শেষে আবার প্রেসিডেন্সি জেলে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু জেলে ফিরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে রয়েছেন সুজয়। বৃহস্পতিবার আদালতে এই বিষয়টি তুলেছে ইডি। তাদের দাবি, স্ত্রীর মৃত্যুর পর সুজয় ১৬ দিন প্যারোলে ছিলেন। সেই সময় তাঁর কোনও অসুস্থতা ছিল না। জেলে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এ প্রসঙ্গে নিয়োগ মামলায় ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়। ইডির আইনজীবী জানান, পার্থের সময়েও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাঁকে শেষ পর্যন্ত ভুবনেশ্বর এমসে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে ‘কালীঘাটের কাকু’র ক্ষেত্রে সশরীরে দিল্লি এমসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেনি ইডি। তাদের আবেদন, সুজয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি দিল্লিতে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হোক। সুজয়ের স্বাস্থ্যের বিষয়ে এমসের চিকিৎসকদের মতামত জানতে চায় ইডি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.