পুলিশ পরিচয় দিয়ে বৃদ্ধকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে হুগলির চন্দননগরে গ্রেফতার করা হল এক মহিলা-সহ তিন জনকে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ওই বৃদ্ধকে শ্লীলতাহানির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রায় দু’লক্ষ টাকা তোলাবাজির অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, চন্দননগর কলুপুকুর পঞ্চাননতলার সত্তরোর্ধ্ব রমেশ চট্টোপাধ্যায় একটি আবাসনে একাই থাকেন। ছেলে চাকরির সূত্রে পরিবার নিয়ে লন্ডনে থাকেন। পাড়ারই এক প্রৌঢ়ের সঙ্গে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রমেশের।
এর পর ওই প্রৌঢ়ের পালিতা কন্যার সঙ্গেও পরিচয় হয় রমেশের। সেই পরিচয়ের সূত্রে কয়েক বার রমেশের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। খাটে বসে ছবিও তুলেছিলেন।
অভিযোগ কিছু দিন আগে চুঁচুড়া আদালতের মহুরি তারকনাথ কুন্ডু চন্দননগর থানার পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে রমেশকে ফোন করেন। বলেন থানায় বৃদ্ধের বিরুদ্ধে বন্ধুর মেয়েকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ পদক্ষেপ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে বলেও জানান তারকনাথ। সেই সঙ্গে হুমকি দেন, টাকা না দিলে পুলিশ রমেশকে ধরবে এবং লন্ডনে তাঁর ছেলেকে এই ঘটনার কথা জানানো হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ভয় পেয়ে বৃদ্ধ মোট ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা কয়েক ধাপে দেন। টাকা নেন ওই প্রৌঢ় এবং তাঁর পাতানো মেয়ে। এর পর গত ২২ জুলাই বৃদ্ধ তাঁর পরিচিত এক পুলিশ অফিসারকে জানান, তিনি ফাঁদে পড়েছেন। এর পর সেই পুলিশ অফিসার চন্দননগর থানার আইসি শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘটনার কথা বলেন। আই সি বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরই পুলিশ ফাঁদ পাতে প্রতারকদের ধরার জন্য।
এর পর প্রতারকদের ফোন পেয়ে ফের টাকা দিতে যান রমেশ। সেখানে আগে থেকে সাদা পোশাকে পুলিশকর্মীরা অপেক্ষা করছিলেন। টাকা নিতে এসে ধরা পরে অভিযুক্ত মুহুরি। আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করতেই তিন জনের নাম সামনে আসে। তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার ধৃতদের চন্দননগর আদালতে পেশ করা হয়েছে। রমেশ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘বন্ধু সেজে যে এমন প্রতারণা করা যায়, তা আমি ভাবতেই পারিনি।’’