ভোট ঘোষণার পরে রাজ্যে দু’টি সমাবেশ হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর। প্রথমটি হয় কোচবিহার আর দ্বিতীয়টি জলপাইগুড়িতে। তৃতীয় দিনে একই সঙ্গে বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ দুই লোকসভা আসনে প্রচারে আসছেন মঙ্গলবার। এর মধ্যে বালুরঘাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের আসনও রয়েছে। যে আসনের জন্য ইতিমধ্যেই প্রচার করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ বার মোদীর সভায় একটি বিশেষ চমকের ব্যবস্থা থাকছে সুকান্তের এলাকায়।
গত কয়েক বছর ধরেই বিজেপি বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে আসছে। উত্তরবঙ্গেও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ও সম্প্রদায়ের আলাদা ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই কোচবিহারের সভা সঞ্চলনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এক জন রাজবংশী নেত্রীকে। তুফানগঞ্জের বিধায়ক তথা কোচবিহারের জেলা সভাপতি মালতী রাভা রায় মঞ্চ-সঞ্চালনার দায়িত্ব পান। আবার জলপাইগুড়ি জেলায় যে হেতু বড় অংশের ভোটার নেপালি জনগোষ্ঠীর। সেখানেও মঞ্চ সঞ্চলনার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় এক নেপালি নেত্রীকে। দুই সভাতেই মহিলা সঞ্চালক বাছার ক্ষেত্রেও বিজেপির বিশেষ ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এ বারের দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে মহিলা ভোটকে যে বিজেপি পাখির চোখ করেছে তা প্রধানমন্ত্রীর পর পর সভার বক্তব্যই বলে দিচ্ছে। আবার রাজ্যের দুই প্রার্থীকে মোদী ফোন করেছেন। দু’জনেই মহিলা। বসিরহাটের রেখা পাত্র এবং কৃষ্ণনগরের অমৃতা রায়।
শুধু মহিলা নয় সেই সঙ্গে আদিবাসী দ্রৌপদী মুর্মুকে দেশের রাষ্ট্রপতি করার সময়েই বিজেপি একটা বার্তা দিতে চেয়েছিল। মোদীও বার বার সে কথা উল্লেখ করেছেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাটে দলের ভাবনা কোনও একজন আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে মোদীর সমাবেশ সঞ্চালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, বালুরঘাট আসনে ১৫ শতাংশ ভোটার আদিবাসী সম্প্রদায়ের। সেই সঙ্গে তফসিলি জাতির ভোটার রয়েছেন ২৫ শতাংশ। সেই ভোটও ঝুলিতে ভরা বিজেপির লক্ষ্য। সেই কারণে, সব কিছু ঠিক থাকলে বালুরঘাটে মোদীর মঙ্গলবারে সভায় জোড়া সঞ্চালক দেখা যেতে পারে। তাঁরা এক জন আদিবাসী এবং এক জন তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হবেন। বিজেপির বালুরঘাট জেলা নেতৃত্ব এমন সম্ভাবনার কথা স্বীকার করলেও এখনই কারা সঞ্চালনা করবেন তাঁদের নাম, পরিচয় প্রকাশ করতে চাইছেন না। জেলার এক নেতা বলেন, ‘‘আমরা সকলকে সমান চোখে দেখি। আমাদের নেতা মোদীজি ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ বলেন এবং করেন। আমরাই এক জন আদিবাসী নারীকে দেশের সর্বোচ্চ পদে বসিয়েছি। দলের সর্বস্তরেও পিছিয়ে থাকা শ্রেণির গুরুত্ব রয়েছে।’’