একই দিনে কোচবিহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাই ভোল্টেজ সভা ছিল। আর স্বাভাবিকভাবেই এই দুই সভাতেই প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে এসেছিল সিএএ। মোদী যেমন রাজ্যের মানুষকে সিএএ নিয়ে আশার বার্তা দিয়েছেন, তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইন রূপায়ণের বিরোধিতা করেছেন।
ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে সিএএ লাগু হয়েছে। যা নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছে সমস্ত মহলে। বিজেপির দাবি, এই আইনে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু তৃণমূল দাবি করেছে, এই আইনে নাগরিকত্ব দেওয়া নয়, বরং কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, সিএএ’র কারণে অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবেন বাংলার মানুষ।
সিএএ লাগু হওয়ার পর প্রথমবার বাংলায় এসে নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল এবং বামেদের তরফে ভুল বোঝানো হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, “তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামেরা রাজবংশী, নমশূদ্র, মতুয়াদের কথা কখনো ভাবেনি। এখন যখন বিজেপি সরকার সিএএ নিয়ে এসেছে তখন এরা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।” কোচবিহারের জনসভা থেকে মোদী বলেন, সব পরিবারকে নাগরিকত্ব দেওয়া মোদীর গ্যারান্টি। বাংলার সব পরিবারকে আমি বলব, তৃণমূল, বামেরা ভয় দেখাবে, কিন্তু আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। আপনারা দশ বছর আমার কাজ দেখেছেন। আপনারা মোদীর গ্যারান্টিতে নিশ্চিন্তে ভরসা করতে পারেন।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দেশজুড়ে সিএএ লাগু হয়েছে। আর তারপরই তৃণমূল ও মুখ্যমন্ত্রী নিজে সকলকে বলেছেন, কেউ যেন সিএএর জন্য আবেদন না করেন। তাঁর দাবি, আবেদন করলেই নাগরিকরা নাগরিকত্ব হারাবেন, অনুপ্রবেশকারীতে পরিণত হবেন। আর এর ফলেই সন্ধিহান হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু সিএএ কার্যকর হওয়ার পর প্রথমবার বাংলায় এসেই মানুষকে মোদী গ্যারান্টি দিয়ে আশ্বস্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে ১৯৭১ সালের পর ভারতে আসা উদ্বাস্তুরা সংবিধান অনুযায়ী দেশের নাগরিক নন বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংজ্ঞাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিএএ নিয়ে মিথ্যাচার করছেন বলে অভিযোগ করেন। বিষয়টিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিতর্ক সভায় বসার চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে এই ইস্যুতে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে বনগাঁর এই সংসদ তথা কেন্দ্রের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। গাইঘাটায় একটি নির্বাচনী প্রচারের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে তাকে বলতে দেখা গেছে একটাও তৃণমূলের লোককে আমরা নাগরিকত্ব দেব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেন তাদের বাঁচান।(এই ভিডিওর সত্যতা আমাদের ভারত যাচাই করেনি)
এদিকে সিপিএমের ইস্তেহারেও সিএএ-র বিরোধিতা করা হয়েছে। বলা হয়েছে ক্ষমতায় এলে বাতিল হবে সিএএ। সবমিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে হট টপিক হয়ে উঠেছে সিএএ।