একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাস কেড়ে নিল তিনটি প্রাণ। একজনের খোঁজে নেমে নিথর হয়ে গেলেন অন্যজন। বীরভূমের খয়রাশোলের ঘটনা। এনিয়ে একদিকে স্বজন হারানের কান্না। অন্যদিকে,উত্তেজনা তৈরি হয়েছে এলাকায়। তিন যুবককে উদ্ধার করতে ছুটে এল দমকল।
শনিবার ওই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে খয়রাশোল ব্লকের কাঁকরতলা থানার হজরতপুর গ্রামের বাউড়িপাড়ায়। মৃত তিনজনেই এলাকার বাসিন্দা। এদিন সনাতন ধীবব নামে এক ব্যক্তির বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক সাফ করতে নামেন বীরবল বাদ্যকর(৪৫)। ভেতরে নেমে বীরবল না ওঠায় বাকী ২ জনের সন্দেহ হয়। তাঁর খোঁজে ট্যাঙ্কে নামেন সনাতন ধীবর(৪৮) নামে অন্য এক সাফাই কর্মী। তিনিও উপরে উঠতে পারেননি। এরপর এই দুজনের খোঁজে ট্যাঙ্কে নামে অমৃত বাগদি(৩২) নামে তৃতীয় শ্রমিক। তিনিও উঠতে পারেননি।
এদিকে, তিনজন ট্যাঙ্কে নেমে না ওঠায় গ্রামে হইচই পড়ে যায়। খবর পেয়ে চলে আসে কাঁকরতলা থানার পুলিস। সিউড়ি থেকে আনা হয় দমকল। গ্রামের মানুষজনের দাবি পুরসভা এলাকায় মেশিনের সাহায্যের ট্যাঙ্ক সাফ করা হয়ে। তাহলে গ্রামে কেন সেই পরিষেবা পাওয়া যাবে না। স্বজন হারানো এক মহিলা জানালেন, বাবা-হ ৩ জন ট্যাঙ্ক সাফ করতে নেমেছিল। কেউ উঠতে পারেনি। চার ঘণ্টা হয়ে গেল।
২০২১ সালে এভাবেই ট্যাঙ্ক সাফ করতে গিয়ে বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বকপুরে মৃত্যু হয়ে ২ ভাইয়ের। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া দাদাতে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ভাইও। বাড়ির পায়খানার ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে যাওয়ার তা থেকে অন্য সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে পাইপ বসাচ্ছিলেন সামাদ সেখ নামে এক যুবক। অসাবধানতাবশত তিনি ট্যাঙ্কে পড়ে যান। তাঁকে তুলতে গিয়ে সুখতারা সেখ নামে তার এক ভাইও বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞাণ হারিয়ে ফেলে। ভাইপোদের অবস্থা দেখে কাকা আমির চাঁদ তাদের বাঁচাতে গেলে সেও পায়খানার সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরিবারের অন্যান্যরা মিলে তিনজনকে উদ্ধার করলে সুখতারা সেখ এবং সামাদ সেখের মৃত্যু হয়। কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে যান আমির চাঁদ সেখ।