বীরভূমের খয়রাশোলে কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবার পিছু ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও ১ টি করে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিল রাজ্য সরকার। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। যদিও, ওই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চাইলেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা। প্রসঙ্গত, খয়রাশোলের গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারিতে বিস্ফোরণের ৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি । গুরুতর জখম ৩ জন সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যে কোম্পানি ওই জায়গায় কয়লা উত্তোলন করছিল তারা দেবে ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে রাজ্য সরকার দেবে চাকরি ও ২ লাখ টাকা।
বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানার অন্তর্গত ভাদুলিয়া গ্রামে জিএমপিএল, অর্থাৎ গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারি রয়েছে। সেখানে কয়লার চাই ভেঙে উত্তলোনের জন্য ডিটোনেটর ও জিলেটিন স্টিক দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷ স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় অসাবধানতাবশত বড়সড় দূর্ঘটনা ঘটে। জিলেটিন স্টিকের গাড়ি পর্যন্ত বিস্ফোরণে উড়ে যায়৷ ঘটনায় ৭ জন খাদান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন জয়দেব মুর্মু, সোমলাল হেমব্রম, মঙ্গল মারান্ডি, জুডু মারান্ডি, পলাশ হেমব্রম, রুবিলাল মুর্মু। মৃতদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে৷ খনিতেই তাদের ছিন্ন ভিন্ন দেহ পড়েছিল৷ এই মুহুর্তে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি, আহত ৩ জন সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বীরভূম জেলা অতিরিক্ত পুলিস সুপার (বোলপুর) রাণা মুখোপাধ্যায় জানান, ফরেন্সিক দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করবেন৷ এছাড়া, মৃতদের পরিবার পিছু ৩০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হবে ও পরিবার পিছু ১ টি করে হোম গার্ডে চাকরি দেওয়া হবে। এমনটাই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অতিরিক্ত পুলিস সুপার বলেন, “খাদান কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। আমরা দেহ উদ্ধার করেছি। ৩ জনের চিকিৎসা চলছে৷ পরবর্তীতে কেউ যদি কোন অভিযোগ দেয় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে, তখন তদন্ত করা হবে৷”
এদিকে, এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন৷ তাঁর অভিযোগ, সঠিক পরিকাঠামো ছাড়াই কয়লা উত্তোলন হত৷ তিনি আরও বলেন, “খুবই মর্মান্তিক ঘটনা৷ বিস্ফোরণে এতগুলো প্রাণ গেল, আহত কতজন৷ প্রশাসনের মদতে এই কয়লা খনি চলে। জঙ্গল কেটে খনি করা হয়, ওভার লোড গাড়ি যায়৷ অতিরিক্ত গভীর খনন করা হয়৷ আর বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাস্তা দিয়ে আসছে৷ আজ যদি এই বিস্ফোরণ জনবহুল এলাকায় ঘটত কী হত৷ প্রশাসন দায়িত্ব এড়াতে পারে না৷ তাই আমরা চাই এনআইএ তদন্ত হোক। তাহলেই সত্য সামনে আসবে।”