রাইটার নিয়ে মাধ্যমিকে বসতে হল বীরভূমের এক ছাত্রীকে। কেন? জানা যাচ্ছে, বন্ধুর উপর বন্ধুর আক্রমণের ঘটনা। মেধাবী ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক আগে-আগেই আক্রান্ত হল বন্ধুর হাতে। তার হাতে ছুঁড়ে দেওয়া হল অ্যাসিড। কেন এই আক্রোশ? মেধাবী ছাত্রীটির বাড়ির লোকজনের দাবি, তাঁদের মেয়ে পড়াশোনায় খুবই ভালো। মাধ্যমিকের ফলাফলের নিরিখে হয়তো স্কুলে সে প্রথম দশজনের মেধাতালিকায় থাকতেও পারে। আর সেটাই সহ্য করতে পারেনি তার বন্ধুবর্গ। তাদেরই একজন তাই তার উপর এই ভাবে শোধ তুলেছে।
মাধ্যমিকে স্কুলের মেধাতালিকায় যাতে সে জায়গা না পায় সেজন্য এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ডান হাত অ্যাসিড ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া অভিযোগ শোনা গেল ছাত্রীর পরিবারের মুখে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের নলহাটি থানার মেহেগ্রামে। অ্যাসিড-আক্রান্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর নাম রাজলক্ষ্মী দে। তেজহাটি জে এম হাইস্কুলের ছাত্রী সে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ছাত্রীর পরিবারসূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজলক্ষ্মী তার বাড়িতে পড়াশোনা করছিল। সেই সময়ে তারই স্কুলের এক বন্ধু তাকে কিছু একটা উপহার দেওয়ার কথা বলে তাকে বাইরে ডাকে। অভিযোগ, বন্ধুর ডাকে রাজলক্ষ্মী বাড়ির বাইরে বেরোলে তার বাঁ হাতে একটি চিঠি গুঁজে দিয়ে ডান হাতে অ্যাসিড ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ওই বন্ধু।
এরপর রাজলক্ষ্মীকে প্রথমে নলহাটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আজ, বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে সে। জানা গিয়েছে, আজ রাজলক্ষ্মী রাইটার নিয়ে হলে বসে পরীক্ষা দেবে।
গোটা ঘটনাটি জানিয়ে নলহাটি থানায় কারও নাম উল্লেখ না করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রাজলক্ষ্মীর বাড়ির লোকজন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নলহাটি থানার পুলিস।
তবে স্থানীয় সূত্রে একটা অন্য ঘটনার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, রাজলক্ষ্মীর পরিবার আসল ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজলক্ষ্মী পড়াশোনায় ভালো হলেও এতটাও ভালো নয় যে, সে স্কুলের ১ থেকে ১০ জনের মেধাতালিকায় সে থাকতে পারে। এই কথা বলে বিষয়টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তার পরিবার। আসলে এটি প্রেমঘটিত ব্যাপার। প্রেমিকই এই কাণ্ড করেছে, কিন্তু সে কথা স্বীকার করা হচ্ছে না।