রুপো পাচ্ছেন না বিনেশ, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে খারিজ ভারতীয় কুস্তিগিরের আবেদন

আন্তর্জাতিক আদালতে হার বিনেশ ফোগাটের। সরকারি ভাবে রায় ঘোষণা না হলেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশনের (আইওএ) সভাপতি পিটি ঊষা এই খবর জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে। আন্তর্জাতিক কুস্তি সংস্থার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্রীড়াক্ষেত্রের সর্বোচ্চ আদালত কোর্ট অফ আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে (ক্যাস) আবেদন করেছিলেন বিনেশ। চেয়েছিলেন, অলিম্পিক্স থেকে বাতিল করা হলেও অন্তত রুপো দেওয়া হোক তাঁকে। আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় বিনেশের অলিম্পিক্স পদক প্রাপ্তি হচ্ছে না।

ক্যাস-এ আবেদন করলেই যে বিনেশ রুপো পাবেন, এমন প্রত্যাশা কারওরই ছিল না। নিয়ম মেনে এই আবেদন করা হয়েছিল। অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যাবে। সেটাই সত্যি হয়েছে। ফলে অলিম্পিক্স থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে বিনেশকে। আইওএ সভাপতি ঊষা রায় জানার পর ঘনিষ্ঠ মহলে হতাশা এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিং এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির বিরুদ্ধে বিনেশের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আলালতের বিচারক। এই সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত হতাশ। বুধবার এই সিদ্ধান্ত জানা গিয়েছে। মহিলাদের কুস্তির ৫০ কেজি বিভাগে বিনেশের যুগ্ম রুপোর পদকের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। ক্রীড়া জগতের বৃহত্তর স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।’’ যদিও মঙ্গলবার জানানো হয়েছিল, আগামী ১৬ অগস্ট ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সরকারি ভাবে রায়দান করবে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত।

বিনেশ দাবি করেছিলেন, মঙ্গলবার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন তিনি। তখন ওজন নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল না। তা হলে ফাইনালে না খেলতে পারায় তাঁকে অন্তত রুপো দেওয়া উচিত ছিল। সেই আবেদনেরই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত।

১৯৮৩ সালে গঠন করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত। খেলা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ সেখানে করা য়ায়। এই আদালতে ব্যক্তিগত ভাবে ক্রীড়াবিদেরা অভিযোগ করতে পারেন। আবার কোনও দেশের ক্রীড়া সংস্থাও সেখানে অভিযোগ করতে পারে।

অনেক সময় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ দেয়, বিবৃতি জারি করে সেই ক্রীড়াবিদের কাছে ক্ষমা চাইতে। কারণ, সংস্থার সিদ্ধান্তের কারণে ক্রীড়াবিদের মানহানি হয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আর্থিক ভাবে সেই ক্রীড়াবিদকে ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। তবে আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তার বিরুদ্ধে আর আবেদন করা যায় না।

বুধবার সকালে জানা যায়, ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় মহিলাদের ৫০ কেজি বিভাগের ফাইনালে নামতে পারবেন না বিনেশ। তাঁকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। ওজন কমানোর জন্য সারা রাত পরিশ্রম করেছিলেন বিনেশ। শরীরে জল পরিমাণ কম থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান পিটি ঊষা। ভারত জানায়, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থার কাছে আবেদন করবে তারা। আন্তর্জাতিক সংস্থা অবশ্য কোনও আবেদনে সাড়া দেয়নি। তার পরেই আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে অভিযোগ করেন বিনেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.