কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল শীর্ষ আদালত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে আর কোনো বাধা রইল না ইডি সিবিআই’য়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল সেখানে হস্তক্ষেপ করতে চাইলো না দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করার অর্থ তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া, যা কখনোই উচিত নয়। তবে অভিষেক ও কুন্তলকে আদালতের সময় নষ্টের জন্য যে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল হাইকোর্ট তা বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তল ঘোষের একটি চিঠির ভিত্তিতে অভিষেককে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। এর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই হাইকোর্টের নির্দেশ বজায় রাখলো সুপ্রিম কোর্ট।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি কুন্তল ঘোষকে গ্রেপ্তার করে তাকে আদালতে পেশ করার সময় অভিষেকের নাম নেন। কিন্তু এরপরেই হেস্টিং থানা ও আলিপুর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে চিঠি দিয়ে কুন্তল দাবি করেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছে তাকে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায়। বিষয়টির বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে যায় ইডি। এই অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যে বলে দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। সেই মামলাটির শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সংস্থাকে অনুমতি দেয় যে প্রয়োজনে চিঠির প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে কিন্তু তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কয়েকটি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরিয়ে নেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তার বদলে মামলাটি বিচারপতি অমৃত সিনহার বেঞ্চে যায়। মামলাটির শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খতিয়ে দেখেন বিচারপতি সিনহা।
অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে তিনি জানান, অযথা মামলা করে আদালতের সময় নষ্ট করছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল রাখেন তিনি আর আদালতের সময় নষ্ট করার জন্যে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। পরবর্তীতে অভিষেক সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করে ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্য রাজি হয়নি বেঞ্চ। এরপর অভিষেক সুপ্রিম কোর্টে যান। সেখানে মামলার শুনানিতে আজ কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলো শীর্ষ আদালত।