স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের(Swastika Mukherjee) একমাত্র মেয়ে নিখোঁজ। হন্যে হয়ে মেয়েকে খুঁজছেন তিনি। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত। সেই তদন্তে পুলিসের সন্দেহের তীর এক জনপ্রিয় সাংবাদিকের দিকে। আগের রাতে একটি পার্টিতে গিয়েছিল তাঁর মেয়ে। তারপর থেকেই তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্ত সাংবাদিকের গাড়িতে ও শার্টে পাওয়া গেছে তাঁর মেয়ের রক্তের ছাপ। পুলিসের প্রশ্নের মুখে সেই সাংবাদিক। আসলে এই পুরো ঘটনাটাই ঘটছে অয়ন চক্রবর্তীর(Ayan Chakraborty) আগামী সিরিজ ‘নিখোঁজ’-এর(Nikhoj) চিত্রনাট্যে।
সিরিজে স্বস্তিকা একজন সিঙ্গল মাদার পাশাপাশি ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিস। অন্যদিকে টোটা রায়চৌধুরী(Tota Roychoudhury) এক জনপ্রিয় সাংবাদিক, তাঁর নাম রোমিত সেন। স্বস্তিকার মেয়ে দিতি নিখোঁজ। মেয়ের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে রোমিত সেনের না। তাঁকে গ্রেফতারও করেছে পুলিস। পুলিসি তদন্তে কি সত্যিটা সামনে আসবে। সত্যিই কি রোমিত সেন খুন করেছে দিতির? সেই সব প্রশ্ন নিয়েই ক্রাইম থ্রিলার লিখেছেন অয়ন চক্রবর্তী। স্বস্তিকা ও টোটার পাশাপাশি এই সিরিজে বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শাঁওলী চট্টোপাধ্যায়, সোমাশ্রী, প্রতীক সহ আরও অনেকে। সিরিজের সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রূপম ইসলাম।
স্বস্তিকার জীবনে কখনও কেউ নিখোঁজ হয়েছে? জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে অভিনেত্রী বলেন, ‘সবার জীবনেই ঘটে। ইন্টারনেটের যুগে একটা শব্দ হয় ঘোস্টিং। রাত দশটা অবধি একটা লোকের সঙ্গে কথা হল, পরেরদিন দেখলাম তার আর কোনও খোঁজ নেই। হয়তো দেখবে ব্লকই করে রেখেছে। আমার বাবা-মা-দের জেনারেশন এটা ভাবতেই পারে না। আমরা এই সভ্য সমাজে সেগুলো সব কুল মনে হলেও এরকম ঘটনা ঘটে থাকে যেগুলো কুল নয়’।
পুলিসের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কী বিশেষ কোনও প্রস্তুতি নিয়েছেন। উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি রোগা নই, কিন্তু ফিট। অয়নদাকে বলেছিলাম সেটা। এই সিজনে কোনও স্পেশাল অ্যাক্টিভিটি নেই। তবে আগামী সিজনে থাকবে। আমি এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছি’। কেমন ছিল টোটা রায়চৌধুরীর সঙ্গে রসায়ন? অভিনেত্রী বলেন, ‘টোটার সঙ্গে অভিনেতা হিসাবে রসায়ন ভালো। তবে এখানে আমাদের চরিত্র অনুযায়ী একজন অভিযুক্ত আর একজন পুলিস। সেই মতে রসায়ন কাজ করেছে।যুদ্ধ চলছে। অনেক বছর পর টোটার সঙ্গে কাজ করলাম। ওকে মানুষ হিসাবেও ভালো লাগে। ওর আর আমার সিনগুলো ভালো হয়েছে। আমি যতটা দিতে পেরেছি, ও ততটা দিয়েছে’।
সিরিজের বিষয় প্রসঙ্গে টোটা রায়চৌধুরী বলেন, ‘একজন নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। আর সেই নিখোঁজের কারণেই আরও অনেকের জীবনে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কারোর পারিবারিক জীবনে বিপর্যয় নেমে আসছে। কিছু মানুষের সত্যি অসুবিধা হচ্ছে। কারোর সুবিধা হয়েছে। ভারতবর্ষে তথা বাংলায় বহু মানুষ নিখোঁজ হয়ে যায়। সেই ব্যক্তির নিখোঁজ হয়ে যাওয়া কীভাবে পরিবার থেকে পুলিস প্রশাসনে প্রভাব ফেলে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই ছবি।’
নিখোঁজ হওয়া একটা ধারণাও। অনেকে থেকেও হারিয়ে যাচ্ছেন, এই কনসেপ্টে বিশ্বাসী টোটা? জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে অভিনেতা জানান, ‘থেকেও হারিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। মানুষ এখন ছিন্ন হতে চায়। তারা চায় না যোগাযোগের মধ্যে থাকতে, শহুরে ব্যস্ততার মধ্যে। এই প্রবণতা পশ্চিমে বাড়ছে। পড়াশোনার মধ্যে দিয়ে জানতে পারছি এমনকী আমাদের দেশেও অনেকে মোবাইল বন্ধ করে দিচ্ছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়াতে থাকছে না। ফোনটা নিজের সুবিধের জন্য, অন্যের জন্য। এর সংখ্যা আগামীদিনে বাড়বে। কারণে চাপটা মানুষ নেওয়ার জন্য তৈরি হয়নি।’
হারিয়ে যাওয়ার ভয় পান টোটা? অভিনেতা বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়ার ভয় করে বলেই কম কাজ করি। যেদিন মনে হবে কোনও ভয় নেই, সেদিন থেকেই কাজ খারাপ হয়ে যাবে। যেদিন আর ক্যামেরা দেখে ভয় লাগবে না, চিত্রনাট্য পড়ে ভয় লাগবে না, অন্য কো আর্টিস্টের পারফলম্যান্স দেখে পেট গুড়গুড় করবে না, সেদিন থেকেই পারফরম্যান্সের উৎকর্ষতা কমবে’।