এটাই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির শেষ আইপিএল মরসুম কি না তা নিয়ে জল্পনা চলছে। তাই প্রতিটি ম্যাচেই ধোনিকে দেখতে চেন্নাইয়ের মাঠে আছড়ে পড়ছে ভিড়। ‘থালা’কে দেখতে এতটাই উৎসাহী সমর্থকরা যে টিকিটের জন্য যত খুশি টাকা খরচ করতেও পিছপা নন সমর্থকরা। আর তাতেই টিকিট নিয়ে বেড়ে চলেছে কালোবাজারি। তাতে নাকি যোগ রয়েছে পুলিশেরও! এমনই অভিযোগ উঠেছে চেন্নাইয়ে।
স্টেডিয়াম থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ফলে সেখানে পড়ছে লম্বা লাইন। প্রতিটি ম্যাচের আগেই সমর্থকরা ভিড় জমাচ্ছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টিকিট মিলছে। অনেকে ব্যর্থ হচ্ছেন টিকিট কাটতে। আবার অনেকে এমনও রয়েছেন, যাঁরা অনেক বেশি টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে চান, কিন্তু লাইনে দাঁড়ানোর মতো সময় নেই। তাঁদের জন্যেই তৈরি হয়েছে বিশেষ ‘ব্যবস্থা’।
এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে আশেপাশে যাঁরা থাকেন, সেই দৈনিক মজুরদের দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে লাইনে। দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট দাম দিয়ে তাঁরা টিকিট কাটছেন। লাইনে দাঁড়ানোর মজুরি হিসাবে যাঁরা সেই টিকিট কিনছেন, তাঁরা বেশ কিছু টাকা হাতে তুলে দিচ্ছেন সেই দিনমজুরদের হাতে। শুধু দিনমজুররা নন, স্থানীয় স্কুল-কলেজছাত্রদেরও টিকিটের লাইনে দাঁড়ানোর কাজে লাগানো হচ্ছে।
কালোবাজারিরাও এই কাজে যুক্ত। পর্দার এ পারে থেকে তাদের অনেকেই গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন। দিনমজুর এবং স্কুলছাত্ররা টিকিট কেনার পর কালোবাজারিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। কালোবাজারিরা সেই টিকিটই অনেক বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে।
লাইনে দাঁড়ানো এক কলেজছাত্র বলেছেন, “লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনার জন্যে আমাদের ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়। আমরা টিকিট ওদের হাতে দিয়ে দিলে, ওরা সেটাই ৫০০০ টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে। এই নিয়ে চতুর্থ ম্যাচে আমি লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটেছি। প্রতি ছ’ঘণ্টার জন্যে ৮০০ টাকা দেওয়া হয়েছে।”
চেন্নাইয়ে টিকিটের এতটাই চাহিদা যে সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকার টিকিটও বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ বা ৫০০০ টাকায়। টিকিটের মুদ্রিত মূল্য যত বেশি হবে, কালোবাজারিদের কাছ থেকে কেনা টিকিটের দামও তত বাড়বে। স্থানীয় কিছু পুলিশও নাকি সেই কালোবাজারির সঙ্গে যুক্ত। টিকিট কিনে প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁদের বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে। ফলে অনেক দূরদূরান্ত থেকে যাঁরা ধোনিকে দেখার প্রত্যাশায় লাইনে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে।
কাউন্টারে কেন টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তা নিয়ে চেন্নাই কর্তারা উত্তর দিতে পারেননি। দুটোর বেশি টিকিট কাউকে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তাতেও আটকানো যাচ্ছে না কালোবাজারি।