কাতারে অকাতরে খরচ, বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে রাত পিছু ২০ লাখ টাকার হোটেলে বেকহ্যাম!

বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা দেখতে বিভিন্ন দেশের প্রায় সাড়ে ১২ লাখ ফুটবলপ্রেমী পৌঁছে গিয়েছেন কাতারে। তাঁদের মধ্যে নাকি সব থেকে বিলাসবহুল দিনযাপন করছেন ডেভিড বেকহ্যাম। ইংল্যান্ডের সংবাদপত্রগুলির অন্তত তেমনই দাবি।

এক সপ্তাহ আগেই বিশ্বকাপের খেলা দেখতে কাতার পৌঁছেছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ক। রয়েছেন দোহার সব থেকে ব্যয়বহুল হোটেলে। সেই হোটেলের একটি দামি স্যুইটে থাকছেন বেকহ্যাম। যে স্যুইটের প্রতি রাতের ভাড়া ২০ হাজার পাউন্ড। অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় ২০ লাখ টাকা।

হোটেলের একদম শীর্ষ তলার এই স্যুইটে রয়েছে আধুনিক জীবনযাপনের সব ব্যবস্থা। বেকহ্যামের ভাড়া নেওয়া স্যুইটে রয়েছে আলাদা খাবার ঘর। টেবিলে এক সঙ্গে খেতে পারবেন ১০ জন। রয়েছে বাগান-সহ ছাদ, জিম, সুইমিং পুল এবং নির্দিষ্ট রাঁধুনিও। এই স্যুইটের জন্য রয়েছে আলাদা নিরাপত্তাকর্মীও। বেকহ্যামের চাহিদা মেনে হোটেল কর্তৃপক্ষ নাকি কয়েক জন কর্মীকে শুধু ওই স্যুইটে পরিষেবা দেওয়ার জন্যই রেখেছে। বেকহ্যাম যত দিন থাকবেন, ওই কর্মীরা তত দিন শুধু তাঁরই দেখভাল করবেন।

সূত্রের খবর বেকহ্যামের মতো প্রাক্তন ফুটবলারকে আবাসিক হিসাবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হোটেলের কর্মীরা। এক কর্মী বলেছেন, ‘‘স্যর ডেভিডের মতো অতিথি রয়েছেন আমাদের হোটেলে। আমরা সবাই দারুণ খুশি। সেরা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘হোটেলে আরও কয়েক জন বিশিষ্ট অতিথি রয়েছেন। স্যর ডেভিড কারও সঙ্গেই তেমন মিশছেন না। উনি যে স্যুইটে আছেন, সেখানে কোনও কিছুর অভাব নেই। হয়তো তাই অন্যদের সঙ্গে তেমন মিশছেন না।’’

খেলা দেখতে যাওয়া ছাড়া হোটেলের বাইরে তেমন যাচ্ছেন না ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক। কাতারের গরম এড়াতে সম্ভবত হোটেলেই থাকছেন তিনি। অতিথি হিসাবে কেমন বেকহ্যাম? ওই কর্মী বলেছেন, ‘‘খুবই নম্র ব্যবহার করছেন আমাদের সঙ্গে। মাঝেমাঝে রসিকতাও করছেন। ফুটবল বিশ্বে ওঁর মতো বিখ্যাত মানুষ কমই আছেন। পরিষেবা দিতে পেরে নিজেদের সম্মানিত মনে হচ্ছে। জানি এখানে থাকতে আসেননি বেকহ্যাম। কয়েক দিন পরেই চলে যাবেন। আমরা নিশ্চিত ভবিষ্যতে কাতারে এলে আমাদের হোটেলেই থাকবেন। কারণ, আমাদের সব ব্যবস্থা এবং পরিষেবায় খুবই খুশি হয়েছেন।’’ বাইরের খাবার বিশেষ মুখে দিচ্ছেন না বেকহ্যাম। ওই কর্মী জানিয়েছেন, স্যুইটের রাঁধুনিকে নিজের পছন্দ মতো খাবার করে দিতে বলছেন। জাপানের কোবে স্টিক এবং কয়েক রকমের পাস্তা খাচ্ছেন মূলত।

বিশ্বকাপ দেখতে এসে সংবাদমাধ্যমকেও এড়িয়ে চলছেন বেকহ্যাম। হোটেলের হোটে সূত্রে খবর, ঢোকার এবং বাইরে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করছেন আলাদা পথ। একটি কালো রঙের বিলাসবহুল গাড়ি ভাড়া নিয়েছেন বেকহ্যাম। বাইরে থেকে গাড়ির ভিতরের কিছুই দেখা যায় না। সেই গাড়িতে যাতায়াত করছেন তিনি। খেলা দেখা ছাড়া কাতারে বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থান ঘুরছেন বেকহ্যাম। স্থানীয় সংস্কৃতি, কাতারের ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। এক দিন দুপুরে ঘুরে এসেছেন দোহার নিউজিয়াম অফ ইসলামিক আর্ট থেকে।

দীর্ঘ দিন ধরেই কাতারের প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে বেকহ্যামের। বিশ্বকাপ দেখতে একাই এসেছেন তিনি। স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে আনেননি। উল্লেখ্য, ১০ বছরের চুক্তিতে কাতারের দূত হয়েছেন বেকহ্যাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.