“বাঙ্গালী হিন্দুত্বের পূণ্যস্নান – প্রসঙ্গ ত্রিবেণী কুম্ভ”

তীর্থ শব্দটার আভিধানিক অর্থ পায়ে হেঁটে গমন। তবে তীর্থস্থান বলতে ধর্মীয়ভাবে পবিত্র স্থান বুঝায় যে স্থানে দেবতা বা স্রষ্টার পূজা/প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় এবং যে স্থানে গমন করলে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। বঙ্গদেশের গঙ্গাসাগারের সমসাময়িক আর এক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হলো সুহ্মক্ষেত্রে অধিষ্ঠিত সপ্তগ্রামের ত্রিবেণীধাম । গঙ্গাতীরে, ২২°৫৮ ১০ উত্তর অক্ষাংশে ও ৮৮°২৬ ৪০´ পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত । কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম বলিয়াছেন ;-
“বাম দিকে হালি সহর দক্ষিণে ত্রিবেণী।
বাত্রিদের কোলাহলে কিছুই না শুনি ৷৷
লক্ষ লক্ষ লোক এক কালে করে স্নান ।
বাস হেম তিল ধেনু দ্বিজে দেয় দান ।
গর্ভে বসি শিব পূজা করে কোন
জন রজতের সিপে কেহ করয় তৰ্পণ ৷৷
শ্রাদ্ধ করে কোন জন জনের সমীপে।
সন্ধ্যাকালে কোন জন দের ধূপ দীপে ।”

কবিকঙ্কণ এই ত্রিবেণীকে “তীর্থের চূড়ামণি” বলিয়াছেন। ত্রিবেণী স্নানের অর্থ নিদ্রিতা শক্তি কুন্ডলিনীর জাগরণ ত্রিবেণীস্নানের মূলাধার পক্ষে হয়, যেখানে ইড়া, পিঙ্গলা ও সুষুম্না এই তিনটি নাড়ি একসাথে মিলিত হয়েছে । ইড়া হলো ভগবতি গঙ্গা (যে ভগ বহন করে), পিঙ্গলা হল যমুনা নদী এবং সুষম্না হল সরস্বতী নদী। ইড়া হলো ধমনী যার মধ্যে শুদ্ধ শোণিত প্রবাহিত হয়, পিঙ্গলা হলো শিরা যার মধ্যে দূষিত রক্ত প্রবাহিত হয় পুনরায় শুদ্ধিকরণের জন্য এবং সুষম্না হলো স্নায়ুতন্ত্র যার মধ্যে আমাদের সকল প্রকার উত্তেজনা প্রবাহিত হয় ও যা সকল অনুভূতির উদ্ভব ঘটায়। এই তিন প্রকার নাড়ি যেখানে মিলিত হয় তাকে বলা হয় ত্রিবেণী। গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর সঙ্গমস্থল ত্রিবেণীধাম হলো এই তথ্যের মুলাধার। ত্রিবেণী স্নানের অর্থ নিদ্রিতা শক্তি কুন্ডলিনীর জাগরণ। তাই ত্রিবেণীতে স্নান করলে সাধকের সুপ্ত শক্তি জাগ্রত হয়, জ্ঞানলাভের পথ প্রশস্ত হয় এবং স্নানার্থী অপার্থিব শান্তিলাভ করে। সাধকরঞ্জন উল্লিখিত ত্রিপদী ছন্দের একটি কাব্য থেকে পাওয়া যায় —
“ইড়া বাসস্থানে পিঙ্গলা দক্ষিণে
মধ্যে নাড়ি সুষুম্না ।।
বামে ভাগীরথী মধ্যে সরস্বতী
দক্ষিণে যমুনা বয় ।
মূলাধারে গিয়ে একত্র হইয়ে
ত্রিবেণী তাহারে কয় ।।”

বিশ্বের দরবারে ভারতের কুম্ভমেলা কয়েক বছর আগেই স্বীকৃতি পেয়েছে। কুম্ভমেলাকে বিশ্বের বৃহত্তম শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পুণ্য লাভের জন্য এক শ্রেণীর মানুষ কুম্ভ স্নানকে আবশ্যিক বলে গণ্য করেন। ২০১৭ সালে UNESCO (ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশনাল সায়েন্টিফিক এন্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন) কুম্ভমেলাকে ভারতের অনবদ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (Intangible Cultural Heritage) বলে ঘোষণা করেছে। কুম্ভমেলার বিভিন্ন পর্যায় বা ধাপ রয়েছে। সাধারণ কুম্ভমেলা হয় প্রতি চার বছর অন্তর। অর্ধকুম্ভ হয় প্রতি ছয় বছর অন্তর হরিদ্বার ও প্রয়াগে (এলাহাবাদে)। পূর্ণকুম্ভ হয় প্রতি বারো বছর অন্তর। গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থানের ভিত্তিতে চারটি নির্ধারিত স্থানে (যথা— প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী ও নাসিক) পূর্ণকুম্ভ হয়। বৃহস্পতি ও সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে কুম্ভমেলার স্থান নির্বাচন হয়। বৃহস্পতি বৃষ রাশিতে এবং সূর্য কুম্ভ রাশিতে অবস্থান করলে প্রয়াগে মেলা হয়। সূর্য মেষ রাশিতে অবস্থান করলে হরিদ্বারে মেলা বসে। সূর্য বৃশ্চিক রাশিতে অবস্থান করলে উজ্জয়িনীতে মেলা হয়। আর বৃহস্পতি ও সূর্য সিংহ রাশিতে অবস্থান করলে নাসিকে মেলা বসে। এভাবে প্রতিটি কুম্ভমেলার স্থান নির্বাচিত হয়। আর বারোটি পূর্ণকুম্ভের পরে অর্থাৎ ১৪৪ বছর (১২x১২) পরে এলাহাবাদের প্রয়াগে বসে মহাকুম্ভ। পূর্ণকুম্ভের জন্য চারটি স্থান (প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী ও নাসিক) নির্দিষ্ট। এর পশ্চাতে প্রচলিত কাহিনীটি হল— সমুদ্রমন্থনের সময় দেবতা ও রাক্ষসেরা অমৃত ভরা একটি কুম্ভ আবিষ্কার করেছিলেন। সেই অমৃত নিয়ে দেবতা ও রাক্ষসেরা ঝগড়া শুরু করলে নারায়ণ নারীর বেশে আবির্ভূত হন। সেই নারীর রূপ দেখে তাঁরা মোহিত হন। আর সেই সুযোগে গরুড় অমৃতের কলসি নিয়ে পালায়। আর তখনই কলসি থেকে চার ফোঁটা অমৃত পৃথিবীতে পড়ে। অমৃতের ফোঁটা পড়া সেই চারটি স্থানেই কুম্ভমেলা হয়। বাংলাতেও একসময় কুম্ভমেলা ছিল সে কথা ভুলেগেছে বিগত অনেকগুলি প্রজন্ম। ৭০৩ বছর অপেক্ষার পর সাধুসন্তদের প্রচেষ্টায় 2022 খ্রিস্টাব্দে পুনরুদ্ধার হলো বাংলার কুম্ভমেলা। পাল ও সেন যুগের পরবর্তী সময়ে বাংলায় ইসলামিক শাসকদের অনুপ্রবেশ এবং অত্যাচারের ফলে বাংলার ইতিহাস থেকে মুছে যায় কুম্ভের নাম। গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী তিন নদীর সঙ্গমস্থল ত্রিবেণী’তে আনুমানিক 1319 খ্রিস্টাব্দে শেষবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছিলো কুম্ভ মেলা। বেহুলা-লক্ষিন্দর খ্যাত হুগলি জেলার ত্রিবেণী ভারতের তীর্থস্থানের মানচিত্রে এক অন্যতম স্থান। প্রাচীনকালে তিন নদীর সঙ্গমস্থল তথা সপ্ত ঋষির তপস্যা কেন্দ্র এই ত্রিবেণী মুক্তবেণী নামে পরিচিত । স্থানীয় ইতিহাসবিদ অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিবেণী কুম্ভ মেলার সঙ্গে গঙ্গাসাগর মেলার একটা যোগ ছিল। তৎকালীন সাধুসন্তরা, গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হওয়ার পর তারা পদব্রজে ত্রিবেণীতে আসতেন। মাঘ সংক্রান্তি অর্থাৎ বিষুব সংক্রান্তির দিন তারা স্নান করতেন। এই দিনটাকেই অনুকূম্ভ হিসেবে ধরা হত ত্রিবেণীতে। সপ্তগ্রাম ও ত্রিবেণী শিক্ষা ও সংস্কৃতির তীর্থভূমি ছিল। তেমনি পূর্ব ভারতে সপ্তগ্রাম বড় বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। সরস্বতী নদীর তীরে ত্রিবেণী সংলগ্ন বাংলার প্রাচীন ও এককালীন সমৃদ্ধশালী বাণিজ্যবন্দর হলো সপ্তগ্রাম । স্কন্দপুরাণ অনুযায়ী কুশদ্বীপের রাজা প্রিয়বন্ত’র মোট সাতজন পুত্র [অগ্নিত্র, মেধাতিথি, বপুস্মান, জ্যোতিস্মান, দ্যূতিস্মান, সবন আর ভব্য ]ত্রিবেণীধাম সংলগ্ন এই স্থানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন, সংলগ্ন সাতটি গ্রামে তারা তাদের আশ্রম তৈরী করলো। এই সাতটি গ্রাম হলো বাসুদেবপুর, বাঁশবেড়িয়া, নিত্যানন্দপুর, কৃষ্ণপুর, দেবানন্দপুর, শিবপুর এবং বলদঘাটি,তাই এর নাম সপ্তগ্রাম । বর্তমানে ব্যান্ডেল জংশন থেকে ৫ মাইল দূরে অবস্থিত। ১২৯২ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি সালতানাত এর সিপাহসালার বাহরাম আইতিগিন জাফর খান গাজী ত্রিবেণী আক্রমন করে । জাফর খানের নির্দেশে তুর্কি সেনা ত্রিবেণীতে প্রচুর গণহত্যা চালায়, হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রা বন্ধ করে দেয় ও ত্রিবেণীর পালযুগে নির্মিত একটি বিষ্ণু মন্দির ভেঙে দেয় । পবিত্র তীর্থক্ষেত্র ত্রিবেণীধামে জাফর খান হিন্দুদের জমায়েত নিষিদ্ধ করে এবং কুম্ভমেলা বন্ধ করে দেয় ।এমন সময় বর্ধমানভুক্তির মহারাজা ভূদেব রায় ত্রিবেণী পুনরুদ্ধার ও হিন্দু শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধযাত্রা শুরু করেন । ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দের মাঘী পূর্ণিমার দিন রাজা ভূদেব রায়ের নেতৃত্ব বর্ধমানের ভেদিয়ার সৈন্যবাহিনী ত্রিবেণী আক্রমণ করে । ইটাচুনার কাছে মহানাদের প্রান্তরে রাজা ভূদেব রায় আর জাফর খান গাজীর সাক্ষাৎ হয় । মহানাদের প্রান্তরে বর্ধমান সেনার সাথে দিল্লি সালতানাত এর সেনার প্রবল যুদ্ধ শুরু হয় । এই যুদ্ধে মহারাজা ভূদেব রায় দিল্লির সেনাকে পরাস্ত করেন ও জাফর খান গাজীর মুণ্ডচ্ছেদ করে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেন । বর্ধমানের হিন্দু সেনা ত্রিবেণী ও সপ্তগ্রাম বিজয় করে, ত্রিবেণীধামে পুনরায় হিন্দু শাসন প্রতিষ্ঠা হয় এবং পুনরায় কুম্ভমেলা শুরু হয় । এখন কিছু ইতিহাসবিদ জাফর খাঁ গাজি ত্রিবেণী কুম্ভমেলা বন্ধ করেন এই মত প্রচার করেন। কিন্তু এই তত্ত্ব আদৌও সঠিক নয় কারণ জাফরের আক্রমণে ত্রিবেণীর যথেস্ট ক্ষতি ও অনেক মন্দির ধ্বংস হলেও পুণ্যস্নানযাত্রা বন্ধ হয়নি । তার প্রমাণ পাওয়া যায় রঘুনন্দনের শ্লোকে ও কিতাব উল রোহিলার বিবরণীতে। রঘুনন্দন খুব গর্বের সাথে সপ্তগ্রামের ত্রিবেণীকে দক্ষিণ প্রয়াগ বলে উল্লেখ করেন অর্থাৎ ত্রিবেণী কুম্ভমেলা তখনো বন্ধ হয়নি । ১৫০৫ সালে পান্ডুয়ার ( মালদা) সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ উড়িষ্যা আক্রমনের জন্য এই অঞ্চল দখল করে । তিনি সপ্তগ্রাম থেকে ত্রিবেনি যাওয়ার জন্য সেতু নির্মাণের আদেশ দেন এবং এই অঞ্চলে কাফের হিন্দুদের জমায়েত নিষিদ্ধ করেন । আলাউদ্দীন হসেন শাহের সময়ে সপ্তগ্রামের নাম “হুসেনবাদ” রাখা হয়। তিনিই ত্রিবেণীর কুম্ভমেলা পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ করে দেন ।

উড়িষ্যা আক্রমণ করে তিনি বহু মন্দির ধ্বংস করেন । বাংলায় যমুনা নদী স্রোত হাড়িয়ে আজ বিলুপ্ত, সরস্বতী নদী নিজস্ব স্রোত হাড়িয়ে বিলুপ্তির পথে, শুধুমাত্র গঙ্গা বয়ে চলেছে সেইসঙ্গে বাংলার সাধু-সন্তদের অন্তরে ৭০৩বছর ধরে সুপ্ত অবস্থায় বয়ে চলেছে কুম্ভ পুনরুদ্ধারের চেতনা। অবশেষে বহুকাল পর ২০২২ সালে সুদূর আমেরিকার বস্টনের অধিবাসী প্রবাসী বাঙালি ইতিহাসবিদ ও বিশিষ্ট সমাজসেবী শ্রী কাঞ্চন ব্যানার্জী এবং হাওড়া শিবপুরের ব্যাবসায়ী শ্রী সাধন মুখার্জীর তত্ত্বাবধানে পশ্চিমবঙ্গের সর্ব পন্থের সাধু-সন্ত দের পথনির্দেশনে স্থানীয় মানুষ দের সঙ্গে নিয়ে সুসংগঠিতভাবে কুম্ভমেলা ও পুণ্য কুম্ভস্নানের আয়োজন করা হয়েছিল ১২ ও ১৩ই ফেব্রুয়ারী মাঘী সংক্রান্তি ভৈমী-একাদশী তিথিতে । এই বিরাট কর্মযজ্ঞের আয়োজক ছিল ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতি । তাদের আহ্বানেই সমগ্র দেশ থেকে সাধু সন্ন্যাসী, মুনি ঋষিগণ ত্রিবেণীর অন্তর্গত গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর জড়ো হয়েছিলেন সপ্তর্ষি ঘাটে ( মৈত্রী, অত্রি, পুলস্ত, পুলহ, ব্যাস, বশিষ্ঠ, বিশ্বমিত্র সপ্তঋষি এখানে তপশ্যা করেছেন )। এই বিরাট কর্মযজ্ঞের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ ত্রিবেণী কুম্ভমেলা’। ২০২৩ এর ২৬ ফেব্রুয়ারী ৯৮তম ‘মান কী বাত ‘ অনুষ্ঠানে বঙ্গতীর্থ ত্রিবেণী নিয়েই মনের কথা বললেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৩ মিনিট ধরে দু’বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা এবং ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতির উদ্যোগে এই মহোৎসবটি আবার আরম্ভ করা এবং এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সব্বাইকে সাধুবাদ জানাই। তিনি বলেন “আপনারা কেবলমাত্র একটি প্রথাকে জীবিত করে তুলছেন তা না; বরং ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষাও করছেন। তিনি বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ধারা যেমন কীর্তন, বাউল , গৌড়ীয়ন নৃত্য, শ্রীখোল, পটের গান, ছৌ নাচ, সান্ধ্য অনুষ্ঠানের , গঙ্গা আরতি, রুদ্রাভিষেক অত্যন্ত প্রশংসনীয় করেন। তিনি ৮ লাখেরও বেশি ভক্তের সমাগম কোথাও উল্লেখ করেন।” ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতির সভাপতি শ্রী সাধন মুখার্জীর ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন এই এবারের ত্রিবেণী কুম্ভ আরও দিব্য ও ভব্য রূপে সেজে উঠবে। ১৫ লক্ষ্যের অধিক ভক্ত্যের সমাগম হবে। ১১ ফেব্রুয়ারী সাধুসন্তদের সমাগম । ১২ ফেব্রুয়ারী শক্তিপীঠের পুষ্প, জল ও মৃত্তিকা সমর্পন দিবা,রুদ্রাভিষেক এবং রুদ্রযজ্ঞ , ধর্মসভা, গঙ্গারতি । ১৩ ফেব্রুয়ারী আদিত্য হৃদয় মন্ত্র , শঙ্খধ্বনি ও সূর্য্য নমষ্কার, শাহী জুলুস, সাধুদের শাহী স্নান , সাধু ভোজন , ধ্বজ অবতরণ তৎপর সমাপন অনুষ্ঠান। অনেকেই কুম্ভ মেলাকে কেবল একটি ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে দেখতে পারেন, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এটি মানবতার উৎসবে বিবর্তিত হয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে জমায়েত হয় যেখানে নাস্তিক এবং আস্তিক উভয়ের ঐহিক আনন্দ ত্যাগের প্রতীক । হিন্দুত্বের এই পুনঃজাগরণ ভারত মাতাকে ফের পরম বৈভাবশালী করার জন্য । বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে ভবানন্দকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমরা অন্য মা মানি না, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।’ এই সনাতন হিন্দুধর্মই পেরেছে দেশকে শুধু একটি জড় পদার্থ নয়, বরং মা হিসাবে দেখতে। তাই দেশ মায়ের এই সাধু-সন্তদের হাত ধরেই বিশ্বের মাঝে ধ্বনিত হবে ভারত মাতার জয়গান।

পল্লব মন্ডল ও জ্যোতিষ্মান সরকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.