মঙ্গলবার বিকেলের কালবৈশাখীতে সবকিছু লন্ডভন্ড। রাস্তায় গাছ পড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি তোলপাড় অবস্থা, বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো জায়গায়। বর্ধমান স্টেশনে উপড়ে পড়ল জাতীয় পতাকা লাগানোর স্ট্যান্ড। প্রবল ঝড়ে বিদ্যুত্ চলে গিয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। প্রবল সমস্যায় পড়ে যান হাসপাতাল কর্মী ও রোগীরা। জেনেরেটর চালিয়ে কোনওক্রমের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। সেই বিদ্যুত্ ফিরল মধ্যরাতে।
বিদ্যুত্ না থাকায় হাসপাতালে সিটি স্ক্য়ান, এক্স রে, এমআরআই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। গতকালের কালবৈশাখীর পর টানা ৪-৫ ঘণ্টা জেনারেটর চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কোনওক্রমে জরুরি কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখা চেষ্টা করা হয়। শেষপর্যন্ত গভীর রাতে ফেরে বিদ্যুত্। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এদিকে, ঝড়ের পর ১০ ঘণ্টা কেটে গেলেও বর্ধমান শহরের বহু জায়গায় বিদ্যুত্ ফেরেনি। জেলার আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট,ভাতার,খণ্ডঘোষ,রায়না ব্লকেও মঙ্গলবার বিকেলে ঝড় বৃষ্টির পর থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। শুধুমাত্র বর্ধমান শহরেই ৫০ টি বিদ্যুতের খুঁটি ঝড়ে ভেঙে পড়ে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ পরিবাহী তার ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ে যায়। রমনার বাগানে গাছ ভেঙে দুটি হরিণের মৃত্যু হয়েছে। রায়নার নাড়ুগ্রামে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। মৃতার নাম সাবিত্রী কুণ্ডু। বয়স ৭০ বছর। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানিয়েছেন, প্রবল ঝড়ে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। পাশাপাশি জেলাজুড়ে ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বর্ধমান শহর থেকে আউশগ্রাম, ভাতার, গলসি, মঙ্গলকোট, জামালপুর সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
প্রবল ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়ল জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড। বর্ধমান স্টেশন চত্বরে কয়েক বছর আগে একটি বিশাল স্ট্যান্ড বসানো হয়। সেই স্ট্যান্ডের মাথায় লাগানো হয় জাতীয় পতাকা। মঙ্গলবার বিকেলে প্রবল ঝড়ে ভেঙে পড়ে সেই স্ট্যান্ড। পাশাপাশি স্টেশন চত্বরে বেশ কয়েকটি গাছও ভেঙে পড়ে। তবে এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানি হয়নি। এছাড়া বর্ধমান শহরের জিটি রোডের উপর বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী তোরণ ভেঙে পড়েছে ঝড়ে। ঝড়ে শহরজুড়ে প্রচুর হোর্ডিংও ভেঙে পড়ে।