ওভারিয়ান ক্যান্সারের জটিল অস্ত্রপচারে সফল বারাসাত মেডিক্যাল, হাসি মুখে বাড়ি ফিরলেন রোগী

 উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙার হায়দারপুর গ্রামের বাসিন্দা ৪৩ বছর বয়সী পুতুল দাস ওভারিয়ান ক্যান্সারে অসুস্থ হয়ে চলতি মাসের সাত তারিখ বারাসাত গভঃমেন্ট মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালের সার্জিকাল বহির্বিভাগে শল্যচিকিৎসক ও অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ডাঃ অলোক কুমার মৌলিকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি হাসপাতালে ভর্তির কথা বলেন। সেইমতন পুতুল দাসকে ভর্তি করে নেওয়া হয় হাসপাতালে। ভর্তির সময় শুধুমাত্র ওভারিয়ান ক্যান্সার নয়, তার সঙ্গে হাই সুগার ও হাই কোলেস্টেরল ছিল। অস্ত্রোপচারের পর শনিবার দীর্ঘ ১৯ দিন পর ছুটি দেওয়া হল পুতুল দাসকে।

হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, পুতুল দাসের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে স্বামীর নাম অসীম দাস, এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যে দিয়ে তাঁদের জীবনযাপন। পুতুল দাসের ওভারিয়ান ক্যান্সার ধরা পড়ার পর আরজিকর, এনআরএস হাসপাতাল সহ কলকাতার একাধিক বড় হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সুরাহা না মেলায় আগস্ট মাসের সাত তারিখ সোমবার স্বামী অসীম দাস বারাসাত সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্ত্রীকে।

১২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা চলার পর গত সপ্তাহে অস্ত্রপচার হয়। অস্ত্রোপচার করেন বারাসাত গর্ভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের শল্যচিকিৎসক ও অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ডাঃ অলোক কুমার মৌলিক ও ডাঃ প্রিয়া রঞ্জনা।

হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, পুতুল দাসের অস্ত্রপচারের জন্য বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় এবং তিন ঘণ্টা সময় লাগে এই অস্ত্রপচারের। আরও জানাগেছে, ওভারিয়ান ক্যান্সারে আক্রান্ত মহিলার এই অস্ত্রপচারের জন্য ত্রিশ বাই ত্রিশ সেন্টিমিটার মেষ প্রয়োজন হয়। এই মেষ সাধারণ বিপণীতে পাওয়া যায় না। হাসপাতালের উদ্যোগে কলকাতার এক কোম্পানি থেকে অর্ডার দিয়ে এই মেষ আনানো হয়।

স্বামী অসীম দাস জানান, “খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলাম হাসপাতালে। অনেকগুলো হাসপাতালে ঘোরার পর বারাসাত হাসপাতালে নিয়ে আসি। বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষমতা আমাদের ছিল না। সরকারি ভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ব্যয়বহুল জটিল অস্ত্রোপচার করলেন হাপসাতালের চিকিৎসকরা, তার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

বারাসাত গর্ভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শল্যচিকিৎসক ও অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ডাঃ অলোক কুমার মৌলিক জানান, “এই অস্ত্রোপচার জটিল ছিল, তবে রোগীকে সুস্থভাবে বাড়ি পাঠানো আমাদের কর্তব্য। এই অস্ত্রোপচার করতে সময় লাগে তিন ঘণ্টা। জটিল হলেও আমরা সফল হয়েছি। রোগী সুস্থ রয়েছেনআ। তাঁকে আজই ছুটি দেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.