বাংলাদেশের পুজােয় সীমাদ্ধতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখিকা তসলিমা নাসরিনের খোলা মন্তব্যে সায় মিলেছে বিস্তর। শনিবার এ ব্যাপারে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, রবিবার বেলা পৌনে দুটোয় তাতে মন্তব্য হয়েছে প্রায় একশ। অধিকাংশই তসলিমার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন।
তসলিমা লিখেছেন, “বাংলাদেশের পূজা মন্ডপে ঝুলিয়ে রাখতে হয় নামাজের সময়সূচি। সত্যিই কি কোনও হিন্দু চায় এই সময়সূচিটা তাদের দেব দেবীর সামনে ঝুলিয়ে রাখতে? চায় না। কিন্তু বাধ্য হয়। কারা তাদের বাধ্য করছে এই কাজে? মুসলমানরা, তাদের হুমকি, তাদের ধমক, তাদের প্রহার, তাদের দাঙ্গা, তাদের মূর্তি ভাঙ্গা! যদি হিন্দুরা চাইতো মণ্ডপে নামাজের সময়সূচি রাখতে, তাহলে ভারতের দুর্গা মন্ডপগুলোয় সেই সময়সূচি থাকতো। কিন্তু কোনও একটি মণ্ডপেও এটি নেই।
বাংলাদেশের কোনও মসজিদে কি হিন্দুদের কোনও পূজা কবে, তার কোনও পঞ্জিকা টাঙানো থাকে? থাকে না। এর মানে সংখ্যায় বেশি হলে সে রাজা, সংখ্যায় কম হলে সে প্রজা, যাকে রাজার অত্যাচার সইতে হবে। সভ্য দেশে কিন্তু সবার–সংখ্যায় কম হোক বা বেশি হোক– অধিকার সমান। বাংলাদেশের সভ্য হতে আর কত হাজার বছর দেরি কে জানে?“
প্রতিক্রিয়ায় মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম লিখেছেন, “আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক হজ্জ করতে যায় অবৈধ টাকায়। অসৎ লোকেরা তাদের অপকর্ম ঢাকতে ধর্মকে ব্যাবহার করে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অলিগলিতে মসজিদ মাদ্রাসার যেমন অভাব নেই তেমনি অভাব নেই এদেশের অলিগলিতে চোরের সংখ্যা। জেনারেল এরশাদ নিজে হাফপ্যান্ট পরতো অথচ সেই সর্বপ্রথম রাষ্ট্রের গায়ে ধর্মের পর্দা লাগিয়েছিল। সাধারণ জনগণ এখন তার দেখানো পথেই হাটছে। যে দেশের রাজনীতিবিদগণ অসৎ সেই দেশের সাধারণ জনগণ এরকম অপকর্ম করবেই।”
পীযূষ বিশ্বাস লিখেছেন, “বাংলাদেশে থাকতে হলে, মুসলিম হয়ে থাকতে হবে। যারা হিন্দু , তারা খুবই কষ্টে আছে। দেখে এলাম। সব সময় একটা আতঙ্কের ভিতরে আছে, কিন্তু মুখে তা বলা যাবে না।”
অদিতি দাস লিখেছেন, “আবার এরাই নাকি বলে ও দেশে হিন্দুরা খুব ভালো আছে, স্বাধীনভাবে আছে! ইসলাম শান্তির ধর্ম, কারো উপর জোর জুলুম করে না– শুধু ভিন্ন ধর্মের স্থানে গিয়ে নিজের ধর্মের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়।”
খন্দেকর জানে আলম লিখেছেন, “বাংলাদেশের মুসলিম আর ইজরাইল(ইহুদি) কিন্তু সমান। বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠিও ঠিক একই কাজ করছেন। বাংলাদেশ থেকে মূল হিন্দু জনগোষ্ঠীকে সরিয়ে ফেলেছে/ফেলতে চায়। বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে, উনারা ইনগ্রুপ সুপারহিউম্যানাইজেশনে আক্রান্ত। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে যে পড়াশোনার দরকার তা উনারা করেন না। সারা বছর মুসলিমরা যে পরিমাণ বিরক্ত করেন মাইকে, বিভিন্নভাবে তার বিপরীতে তেরো পার্বনের শব্দ দূষন নিতান্তই তুচ্ছ। তবুও কোনও এক দল শব্দ দূষণ করছে বলে আমাদের শব্দ দূষণ বৈধ হয়ে যায় আমি এই নীতির বিপক্ষে। আমার ব্যক্তিগত মতামত- পুজোর এই কয়টা দিন আযান ও নামাজ পড়া বন্ধ রাখলেই কিন্তু মিটে যায়। পুজোর সময় মাইকে আযান বন্ধ রাখবে, নাকি নামাজের সময় পুজো বন্ধ রাখবে এইটা নিয়া একটা সিদ্ধান্তে আসা দরকার। ভাগ করে দিতে হবে। সকাল দুপুর পুজো বন্ধ, আর বিকাল সন্ধ্যা নামাজ বন্ধ।”