তারাপীঠ মন্দিরের জীবিতকুন্ডে বামদেব ঘাটে প্রতিষ্ঠা করা হল বামদেবের মূর্তি। তারাপীঠ মন্দির কমিটির উদ্যোগে আজ রাখি পূর্ণিমার তিথিতে এই ঘাটের প্রতিষ্ঠা করা হল। এতদিন জীবিত কুন্ডে দুটি ঘাট ছিল। একটি মা তারার ঘাট, অন্যটি জয় দত্ত সওদাগরের ঘাট। বুধবার যে ঘাটটির প্রতিষ্ঠা করা হল সেই ঘাটটি সাধক বামাক্ষ্যাপার নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। ঘাটের পাশেই বসানো হয়েছে সাধক বামদেবের মূর্তি। সেই মূর্তিতে পুজো অর্চনা করে ঘাট প্রতিষ্ঠা করলেন মা তারার সেবাইতরা। মথুরার গোবর্দ্ধন নিবাসী যোগীরাজ শৈলেন্দ্র শর্মার আর্থিক সহযোগিতায় এবং প্রবীণ সেবাইত অধীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
কথিত আছে জীবিত কুণ্ড থেকেই মা তারার আবির্ভাব হয়েছিল। বনিক জয় দত্ত দ্বারকা নদীর উপর দিয়ে বজরা করে বাণিজ্য করতে যাওয়ার সময় সেকালের চণ্ডীপুর যেটা বর্তমানে তারাপীঠ নামে পরিচিত সেই চণ্ডীপুরে বজরা নোঙর করেছিলেন। সেই সময় সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল জয় দত্ত সওদাগরের ছেলের। সেই দিনই বনিকের একজন ভৃত্য রান্না করার জন্য একটি কাটা শোল মাছ এই পুকুরে জলে ধুচ্ছিল। সেই সময় শোল মাছটি জীবিত হয়ে পুকুরের গভীরে চলে গিয়েছিল। বনিক এই ঘটনা শোনার পরেই তার মৃত পুত্রকে সেই পুকুরের জলে স্নান করাতেই বনিক পুত্র জয় তারা, জয় তারা উচ্চারণ করতে করতে জীবিত হয়ে ওঠেন। সেই সময় থেকেই এই পুকুরটি জীবিত কুণ্ড নামে খ্যাত।
মা তারার সেবাইত গোলক মহারাজ বলেন, এতদিন এই জীবিত কুন্ডে মা তারা ও জয় দত্ত সওদাগরের ঘাট ছিল। তবে তারা মায়ের মানসপুত্র সাধক বামদেব ছাড়া তারাপীঠ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। মা তারার আরাধনা করার জন্য সাধক বামদেব এই জীবিত কুন্ডের জলই ব্যবহার করতেন। সেই দিকে গুরুত্ব দিয়ে তারা মাতা সেবাইত সঙ্ঘ ও তারাপীঠ মন্দির কমিটি সাধক বামদেবের নামে আরো একটি ঘাট গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। আজ সেই ঘাট তারাপীঠে আসা পূর্ন্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, জীবিত কুন্ডের পবিত্র জল তারাপীঠে আসা পূর্ন্যার্থীদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আজ থেকে এই বামদেব ঘাট ব্যবহার করে জীবিত কুন্ডের সেই পবিত্র জল পূর্ন্যার্থীরা ব্যবহার করতে পারবেন।