রেশন ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছ থেকে গম নিয়ে খোলা বাজারে তা বিক্রি করতেন বাকিবুর রহমান। এমনটাই খবর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে। রেশনের গম নিয়ে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। বাকিবুরকে সেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
ইডি সূত্রে খবর, রেশনের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করার সময়ে তা নিয়ে নয়ছয় করতেন বাকিবুর এবং তাঁর সহযোগীরা। এই চক্রে অনেকে যুক্ত আছেন। এমনকি, রেশন ডিস্ট্রিবিউটরেরাও কেউ কেউ দুর্নীতিতে জড়িত। তাঁদের কাছ থেকে যত বস্তা গম চাওয়া হত, তার চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ কম সরবরাহ করতেন তাঁরা। ওই পরিমাণ গম নিজেরা আত্মসাৎ করতেন। রেশন ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরেরাও এ ভাবে লাভবান হতেন। বেশ কয়েক জন আধিকারিকও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বাকিবুরের কাছ থেকে একটি ‘রেজিস্ট্রার বুক’ বা তথ্য নথিভুক্তকরণের খাতা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। কোন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে কত পরিমাণ রেশন সরবরাহ করা হত, তার হিসাব ওই খাতায় রয়েছে। সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই খাতাতেও তথ্য গোপন করা হয়েছে কি না, খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখছেন ইডি আধিকারিকেরা। রেশন বণ্টনে দুর্নীতির পরিমাণ একশো কোটিও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে ইডি।
শনিবার বাকিবুরকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে চায়। আদালত আগামী সোমবার পর্যন্ত বাকিবুরের ইডি হেফাজত মঞ্জুর করেছে।
বাকিবুরের আইনজীবী আদালতে আবেদন জানান, তাঁর মক্কেলকে যেন বাড়ির খাবার খেতে দেওয়া হয়। তবে ইডির তরফে পাল্টা জানানো হয়েছে, বাকিবুরকে ইডি হেফাজতে ভাল খাবারই দেওয়া হবে।
রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে গত বুধবার সকাল থেকে বাকিবুরের কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। ফ্ল্যাট থেকে প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সাড়ে ৫৩ ঘণ্টা তল্লাশির পর শুক্রবার প্রথমে তাঁকে আটক করে ইডি। তার পরেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (কলকাতায় যেখানে ইডির দফতর রয়েছে)। গভীর রাতে সেখানেই বাকিবুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাকিবুরের পাশাপাশি, তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুচরের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। বাকিবুরের ওই ঘনিষ্ঠের নাম অভিষেক বিশ্বাস। তাঁর বাড়ি চিনার পার্কে।