‘ভাগ্যটাই খারাপ’, প্রথম প্রতিক্রিয়া বিনেশের, পদকের দৌড় থেকে বাদ পড়ে কোচকে বললেন ফোগাট

স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বিনেশ ফোগাট। স্বপ্নভঙ্গও করলেন তিনি। প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে বাতিল হয়েছেন বিনেশ ফোগাট। ওজন বেড়ে যাওয়ায় সোনার লড়াইয়ে নামা হয়নি তাঁর। বাদ পড়ে ভাগ্যকে দুষলেন ভারতের।

মহিলা কুস্তিগির। খেলোয়াড়ি মানসিকতাই দেখিয়েছেন তিনি। হতাশ হলেও সব কিছু মেনে নিয়েছেন।

বিনেশের কোচ বীরেন্দ্র দাহিয়া ও মনজিৎ রানি হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন বিনেশ। ছাত্রী কী বলেছেন তা পরে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান বীরেন্দ্র। তিনি বলেন, “গোটা কুস্তি দলের কাছে এটা বড় ধাক্কা। খবরটা শোনার পরে সব মেয়েরাই হতাশ হয়ে পড়েছিল। আমরা বিনেশের সঙ্গে দেখা করেছি। ও খুব সাহসী। ও আমাদের বলেছে, ‘ভাগ্যটাই খারাপ যে পদক হাতছাড়া হল। তবে এই সব খেলারই অঙ্গ।’ ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার অনেক আধিকারিকও বিনেশের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।”

বাধ্য হয়ে অন্য বিভাগে নামেন বিনেশ

কুস্তিতে ৫০ কেজি বিভাগ বিনেশের ইভেন্টই নয়। তাঁর আসল ইভেন্ট ৫৩ কেজি বিভাগ। কিন্তু দিল্লির রাস্তায় আন্দোলনে সামিল হওয়া বিনেশ ৫৩ কেজির ট্রায়ালে যেতেই পারেননি। তাঁর বদলে অলিম্পিক্সের ৫৩ কেজি বিভাগে যোগ্যতা অর্জন করেন অন্তিম পঙ্ঘাল। বিনেশকে তার পর বলা হয়েছিল, তিনি যদি ট্রায়ালে পঙ্ঘালকে হারাতে পারেন, তা হলে তাঁকে পছন্দের ৫৩ কেজিতে নামতে দেওয়া হবে। কিন্তু কুস্তি থেকে দূরে থাকার জন্য স্বাভাবিক ভাবেই বিনেশ সেই ট্রায়ালে হেরে যান। শেষ পর্যন্ত তাঁকে বেছে নিতে হয়েছিল ৫০ কেজি বিভাগ।

অলিম্পিক্স থেকে বাতিল বিনেশ

বুধবার সকালে জানা যায়, ৫০ কেজি বিভাগের ফাইনালে নামতে পারবেন না বিনেশ। ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হয়েছে তাঁর। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা একটি বিবৃতিতে বলে, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে যে, কুস্তিতে মহিলাদের ৫০ কেজির ফাইনাল থেকে বিনেশ ফোগাট বাতিল হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে সারা রাত ধরে চেষ্টা করা হয়েছিল বাড়তি ওজন কমানোর। কিন্তু আজ সকালে ৫০ কেজির থেকে কিছু গ্রাম বেশি ওজন হয়েছে ওর। এখনই ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে এর বেশি কিছু জানানো হবে না।”

হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় বিনেশকে

ওজন কমানোর জন্য সারা রাত ধরে পরিশ্রম করেছিলেন বিনেশ। সারা রাত ঘুমাননি তিনি। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। সেই কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাঁকে। পরে সেখানে বিনেশকে দেখতে যান ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান পিটি ঊষা।

ওজন কমাতে শরীর থেকে রক্ত বার করেছিলেন, চুলও কেটেছিলেন বিনেশ

মঙ্গলবার সেমিফাইনালে জিতে ফাইনালে উঠেছিলেন বিনেশ। ৫০ কেজি বিভাগে খেলতে নামা বিনেশের ওজন প্রায় ২ কেজি বেড়ে গিয়েছিল। সারা রাত ধরে ওজন কমানোর চেষ্টা করেছিলেন বিনেশ। জগিং, স্কিপিং এবং সাইক্লিং করেছিলেন সারা রাত। ওজন কমানোর জন্য ঘাম ঝরাচ্ছিলেন। চুলও কেটে ফেলেছিলেন তিনি। রক্ত বার করেছিলেন। তাতে অনেকটাই ওজন কমিয়ে ফেলেছিলেন বিনেশ। কিন্তু বুধবার সকালে যখন ওজন মাপা হয়, দেখা যায় ৫০ কেজির থেকে কয়েক গ্রাম বেশি ওজন তাঁর। সেই কারণেই প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল করে দেওয়া হয় বিনেশকে।

পিটি ঊষাকে ফোন প্রধানমন্ত্রীর

বিনেশ বাতিল হওয়ার খবর শুনে প্রথমে এক্স মাধ্যমে কুস্তিগিরের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লেখেন, “বিনেশ, তুমি চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন। তুমি ভারতের গর্ব। প্রতিটি ভারতীয়ের অনুপ্রেরণা। আজকের ঘটনাটা বেদনাদায়ক। আমার যদি এই বেদনা আর হতাশা প্রকাশের ভাষা থাকত তা হলে হয়তো বলতে পারতাম। তবে আমি মনে করি তুমি সহনশীলতার মূর্ত প্রতীক। তুমি তো বরাবরই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাস। আমার বিশ্বাস, তুমি আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। আমরা সবাই তোমার পাশে আছি।” পরে ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান পিটি ঊষাকে ফোন করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, ঠিক কী ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত কী কী করতে পারে, সেটাও জানতে চান মোদী। প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেন, এই শাস্তির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানালে যদি ফোগাটের কোনও লাভ হয়, তা হলে সেটাও যেন করা হয়।

বিনেশকে বাতিলের ঘটনায় উত্তাল সংসদ

বিনেশ-প্রসঙ্গ ওঠে সংসদেও। ভারতীয় কুস্তিগিরকে বাতিল করা নিয়ে বিবৃতি দেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। তিনি বলেন, ‘‘১০০ গ্রাম ওজন বেশি থাকার কারণে ভারতীয় কুস্তিগির বিনেশ ফোগাটকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বিনেশ ৫০ কেজি বিভাগে খেলছিলেন। বিশ্ব কুস্তি সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি দিন সকালে প্রতি বিভাগের খেলোয়াড়দের ওজন মেপে দেখা হয়। বুধবার বিনেশের ওজন মেপে দেখা যায়, ৫০ কেজি ১০০ গ্রাম। তাঁর খেলা বাতিল করে দেওয়া হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটির কাছে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতীয় অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশন। আইওএ-র প্রেসিডেন্ট পিটি ঊষা প্যারিসে রয়েছেন। ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’’ বিনেশকে সরকারের তরফ থেকে সব রকম সাহায্য এবং সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বলেও সংসদে উল্লেখ করেছেন মনসুখ। ক্রীড়ামন্ত্রীর এই বিবৃতির ব্যাখ্যা চায় সংসদে উপস্থিত বিরোধীরা। ব্যাখ্যা না পেয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সদস্যেরা লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করেন।

মুখ খোলে ভারতীয় কুস্তি সংস্থা

সোনার লড়াই থেকে বিনেশ বাতিল হয়ে যাওয়ার পর মুখ খোলে সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন (ডব্লিউএফআই)। এক দিনের ব্যবধানে বিনেশের ওজন কী ভাবে ২ কেজি বৃদ্ধি পেল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্ময়। বহিষ্কৃত প্রাক্তন কর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের ঘনিষ্ঠ তথা বর্তমান ডব্লিউএফআই সভাপতি সঞ্জয় সিংহ জানিয়েছেন, তাঁরা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন। মুখ খুলেছেন ব্রিজভূষণের পুত্র করণ ভূষণ সিংহ। তাঁরা বিনেশের কোচ, পুষ্টিবিদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছেন। বিনেশের ওজন হঠাৎ কী ভাবে বৃদ্ধি পেল বুঝতে পারছেন না ডব্লিউএফআই সভাপতি। সঞ্জয় বলেছেন, ‘‘প্যারিসে বিনেশের সঙ্গে ওর ব্যক্তিগত কোচ, ফিজিয়ো, পুষ্টিবিদ আছেন। তাঁরা কেউ ফেডারেশন নিযুক্ত নন। সকলের খরচ বহন করে কেন্দ্রীয় সরকার। বিনেশের ওজন গত দু’দিন ঠিকই ছিল। এক রাতের মধ্যে কী করে ২ কেজি বৃদ্ধি পেতে পারে? ওর কোচ এবং পুষ্টিবিদ হয়তো বলতে পারবেন। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি।’’ সঞ্জয় আরও বলেছেন, ‘‘ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার (আইওএ) প্রধান পিটি ঊষা গেমস ভিলেজে এসেছেন বিষয়টি জানার পরই। তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছেন। আমরা ঊষার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তাঁর সঙ্গে কথা বলার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’

ব্যাখ্যা ভারতীয় দলের চিফ মেডিক্যাল অফিসারের

বিনেশের ওজন কেন কমানো গেল না তা নিয়ে মুখ খোলেন ভারতের চিফ মেডিক্যাল অফিসার দীনশ পারদিওয়ালা। তিনি বলেন, “কুস্তিগিরদের একটা সুবিধা থাকে। খুব দ্রুত ওজন কমাতে-বাড়াতে পারে তারা। বিনেশের ক্ষেত্রেও ওজন কমানো হয়েছিল। ৫৩ কেজির বদলে ৫০ কেজি বিভাগে নেমেছিল ও। কিন্তু খুব বেশি ওজন কমাতে গেলে অনেক সময় শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই কুস্তিগিরেরা কিছু এনার্জি বাঁচিয়ে রাখে। খুব অল্প পরিমাণ জল ও হাই এনার্জি খাবার খেতে হয় তাদের। ওজন মাপার পরে এই খাবার কুস্তিগিরেরা খায়।” বিনেশের পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলেই সব কিছু করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন দীনশ। তিনি বলেন, “বিনেশকে এক দিনে তিনটে ম্যাচ খেলতে হয়েছিল। তাই ওকে পর্যাপ্ত খাবার খেতে হয়েছিল। তাতে বিনেশের ওজন একটু বেশিই বেড়ে গিয়েছিল। ওর পুষ্টিবিদ জানিয়েছিলেন, দেড় কেজি পুষ্টি থাকলেই বিনেশ খেলতে পারবে। সেটা মাথায় রেখেই আমরা ওর ওজন কমানোর চেষ্টা করেছিলাম।”

বিনেশের পাশে সাক্ষী, সিন্ধু, বীজেন্দ্র, অন্য সুর সাইনার

বিনেশ পাশে পেয়েছেন পিভি সিন্ধু ও সাক্ষী মালিককে। সিন্ধু সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘প্রিয় বিনেশ, তুমি আমাদের চোখে সব সময় চ্যাম্পিয়ন। খুব আশা করেছিলাম, তুমি সোনা জিতে ফিরবে। তোমার সঙ্গে খুব অল্প সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছে আমার। সামনে থেকে দেখেছি এক জন মহিলা কী ভাবে প্রতি দিন উন্নতি করার জন্য লড়াই করে। তোমার লড়াই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। সব সময় তোমার পাশে আছি। চাইব বিশ্বের সব শক্তি তোমার পাশে থাকুক।’’ রিয়ো অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন সাক্ষী। ভারতের প্রথম মহিলা কুস্তিগির হিসাবে অলিম্পিক্স পদক জয়ের কীর্তি গড়েছিলেন। গত বছর ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে কুস্তিগিরদের একাংশের আন্দোলনে বিনেশের মতোই অন্যতম মুখ ছিলেন সাক্ষী। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মন খুব বিচলিত হয়ে রয়েছে। বিনেশের সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। এ বারের অলিম্পিক্সে ভারতের যে সব খেলোয়াড়েরা গিয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হল বিনেশের। বুঝতে পারছি না কী করে এমন হল। সম্ভব হলে আমার পদকটা ওকে দিয়ে দিতাম।’’

ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন বক্সার বীজেন্দ্র সিংহ। সমাজমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় এটা ভারতের বিরুদ্ধে বিরাট ষড়যন্ত্র। এক রাতে পাঁচ-ছয় কেজি ওজন কমিয়ে নেওয়ার কথা শুনেছি। তা হলে ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হবে এটা মেনে নেওয়া কঠিন। আমার মনে হয় বিনেশের সাফল্যে কেউ কেউ খুশি নয়। তাই মাত্র ১০০ গ্রামের জন্য ওকে অলিম্পিক্স থেকে বাতিল করে দেওয়া হল। আমাদের খেলায়ও কোনও সময় ওজন বেশি হলে এক ঘণ্টা সময় পাওয়া যেত সেই ওজন কমানোর জন্য। বিনেশকেও সেই সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।” কেন তিনি এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলছেন তার উত্তর দিতে গিয়ে বিজেন্দ্র বলেন, “আগে কখনও এই জিনিস দেখিনি। আমিও অলিম্পিক্স এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। সেখানে মাত্র ১০০ গ্রামের জন্য এই ঘটনা দেখা যায়নি।”

তবে অন্য সুর শোনা গিয়েছে সাইনার গলায়। ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়ের মতে, এই ঘটনার দায় নিতে হবে বিনেশকেও। তিনি বলেন, “এমন নয় যে বিনেশ প্রথম অলিম্পিক্সে খেলছে। এটা ওর তৃতীয় অলিম্পিক্স। ও নিশ্চয়ই নিয়ম জানে। তা হলে এই পর্যায়ে এত বড় ভুল কী ভাবে হল? আমি কোনও দিন শুনিনি ওজন বেড়ে যাওয়ায় কোনও কুস্তিগিরকে বাতিল করা হয়েছে। বিনেশ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। তার পরেও এটা হল। তা হলে এই ভুলের দায় বিনেশকেও নিতে হবে। এত বড় ম্যাচের আগে এই ভুল হওয়া উচিত নয়।”

কুস্তির নিয়ম বদলের দাবি

কুস্তির নিয়ম বদলের দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন বিশ্বজয়ী আমেরিকার জর্ডান বুরোস। প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে বিনেশ ফোগাটকে বাতিল করায় ক্ষুব্ধ প্রাক্তন অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন। তাঁর দাবি, অবিলম্বে নিয়ম বদল করে রুপোর পদক দেওয়া হোক ভারতীয় কুস্তিগিরকে। লন্ডন অলিম্পিক্সে ৭৪ কেজি বিভাগে সোনাজয়ী কুস্তিগির সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘ইউডব্লিউডব্লিউর উচিত অবিলম্বে নিয়ম পরিবর্তন করা। আমার প্রস্তাব, দ্বিতীয় দিন ওজন নেওয়ার সময় ১ কেজি পর্যন্ত ছাড় দিতে হবে। ওজন নেওয়ার সময় সকাল ৮.৩০ মিনিট থেকে পিছিয়ে ১০.৩০ মিনিট করা হোক। কোনও প্রতিযোগী ওজন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে শুধু পরের ম্যাচগুলিতে বাতিল করা হোক। সেমিফাইনাল জেতার পর দুই ফাইনালিস্টই রুপোর পদক নিশ্চিত করে। সেমিফাইনালের সময় সব ঠিক থাকে বলেই খেলতে দেওয়া হয়। ফাইনালে ওঠা কুস্তিগির দ্বিতীয় দিন ওজন পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে তার প্রতিপক্ষকে সোনার পদক দেওয়া হোক। তাকে রুপোর পদক দেওয়া উচিত। কারণ সে নিয়ম মেনে লড়াই করেই ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। আগেই সে পদক নিশ্চিত করে এসেছে। বিনেশকে রুপোর পদক দেওয়া উচিত।’’

বিনেশ-বিতর্কে অবস্থান স্পষ্ট বিশ্ব কুস্তি সংস্থার

নিয়মের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। অলিম্পিক্সের ফাইনাল থেকে বিনেশ ফোগাটের বাতিল হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এমনই জানিয়েছেন ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিংয়ের (ইউডব্লিউডব্লিউ) সভাপতি নেনাদ লালোভিচ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সকলের উচিত নিয়মকে মান্য করা। যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিনেশের জন্য আমারও খারাপ লাগছে। ওর ওজন সামান্য বেশি ছিল। কিন্তু নিয়ম তো নিয়মই। সব কিছুই পরিষ্কার। সবার সামনে সব কিছু হয়েছে। সেখানে অন্য খেলোয়াড়েরাও ছিল। অনুমোদিত ওজন বজায় রাখতে ব্যর্থ এক জনকে কী করে অনুমতি দেওয়া যায়? প্রতিযোগিতা নিয়ম অনুযায়ী চলবে।’’ বিনেশ ফাইনালে উঠেছিলেন সব নিয়ম মেনেই। তা হলে কি তাঁকে অন্তত রুপোর পদক দেওয়া যায় না? লালোভিচ বলেছেন, ‘‘অসম্ভব। এ ভাবে পদক দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ওজনের জন্য ও অন্য ক্যাটেগরিতে চলে যাচ্ছে। আমরা কেউ নিয়মের বাইরে যেতে পারি না। সবাইকে এক নিয়ম মেনে চলতে হয়। এ রকম ক্ষেত্রে সকলেই একটা শেষ চেষ্টা করে। ভারতও আবেদন করেছে। কিন্তু তাতে কিছু বদল হওয়া সম্ভব নয়।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.