মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের উপর হামলার অভিযোগ উঠল হাড়োয়ায়। অভিযুক্ত তৃণমূলেরই এক নেতা। এই ঘটনায় নতুন করে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বৃহস্পতিবার কালীপুজো উপলক্ষে হাড়োয়ায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ঊষারানি। সেখান থেকে ফেরার সময়ে তাঁর উপর হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। অভিযোগ, হামলার নেপথ্যে ছিলেন হাড়োয়ার তৃণমূল নেতা খালেক মোল্লা। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কালীপুজোর আমন্ত্রণে ঊষারানির সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল এবং অনুগামীরা। ফেরার পথে হাড়োয়া অটো স্ট্যান্ডের কাছে তাঁদের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট। এর পর বিধায়ক এবং তাঁর স্বামীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। লাঠি দিয়ে ঊষারানির পায়ে মারা হয়। জখম হয়েছে তাঁর ডান পা। বিধায়কের অনুগামীদেরও মারধর করা হয়েছে। রাতেই হাড়োয়া থানায় এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ঊষারানি। খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
ঊষারানি বলেন, ‘‘আমি রাতে কালীপুজোর নিমন্ত্রণ সেরে ফিরছিলাম। হাড়োয়া অটো স্ট্যান্ডে খালেক মোল্লা এবং তাঁর দলবল আমাদের ২৫ থেকে ৩০ জন ছেলের উপরে হামলা চালায়। আমাকে গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামানো হয়। বড় রড দিয়ে আমার পায়ে মারে। আমার পিছনে দলের কর্মীরা আসছিল। তাদেরও মারধর করা হয়েছে। কয়েক জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দলের উপরমহলের নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ ঊষারানির স্বামী মৃত্যুঞ্জয় বলেন, ‘‘হাড়োয়া থানায় কালীপুজো উপলক্ষে আমাদের নিমন্ত্রণ ছিল। বিধায়ক এবং আমি একটি গাড়িতে ছিলাম। আমাদের ছেলেরা পিছনে বাইকে আসছিল। ফেরার পথে খালেক মোল্লার নেতৃত্বে আমাদের উপর অতর্কিতে আক্রমণ করা হয়। ওরা গাড়িতে ইট মারে, বিধায়ককে নামিয়ে তার পায়ে ব্যাটনের বাড়ি মারে। ১০-১২ জন আহত হয়েছে। খালেক নিজে এ সব করেছে। সঙ্গে ওর লোকজনও ছিল।’’
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে খালেকের সঙ্গে যোগাযোগের করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘ঊষারানি যা বলছে, সম্পূর্ণ মিথ্যা। উনি নিজেই সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের পঞ্চায়েতের প্রধান মল্লিকা মণ্ডল এবং তাঁর লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছেন। গুলিও চালানো হয়েছে। লোকসভা ভোটে নিজের বুথে হেরেছেন, বিধায়ক এখন কোণঠাসা। হাড়োয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভায় তিনি আসেননি। বিজেপির সঙ্গে আঁতাত রয়েছে ওঁর। তাঁর লোকজন এখন দল থেকে বহিষ্কৃত। তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপর দোষ দিচ্ছেন।’’
বৃহস্পতিবার রাতে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর গাড়িতেও হামলা হয়। হাটগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছেন সুকুমার। ন্যাজাট থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। একই দিনে মিনাখাঁর বিধায়কের উপরেও হামলার ঘটনা ঘটল।