“যত চাকরি হয়েছে সব দু-নম্বরি হয়েছে, প্রত্যেকটির তদন্ত হওয়া উচিত,” বন সহায়ক পদে ২ হাজার চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে বনমন্ত্রীকে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের

 “যত চাকরি হয়েছে তাতে সব দু-নম্বরি হয়েছে, দুর্নীতি হয়েছে, টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটির তদন্ত হওয়া উচিত। আর দেখবেন সব জায়গায় এরকম ঘটনা বেরোবে। বেআইনি ভাবে টাকা নিয়ে কিংবা পার্টির লোককে ঢোকানো হয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য সামনে আসছে। মন্ত্রীকেও এর মধ্যে আনা উচিত, তাঁকেও এক্ষেত্রে জবাবদিহি করতে হবে”। গোপীবল্লভপুরে দলের কার্যকর্তা সম্মেলনে যোগ দিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বন সহায়ক পদে ২ হাজার চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে নাম না করে বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে তদন্তের আওতায় এনে জবাবদিহি করার দাবি জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে গোপীবল্লভপুর এক নম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি হেমন্ত ঘোষ বলেন, “বনদপ্তরে যখন নিয়োগ হয়েছিল তখন তিনি (বীরবাহা হাঁসদা) বন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন না। দিলীপবাবুর দাবি হচ্ছে যে বন প্রতিমন্ত্রীকে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। উনি একজন সাধারণ কর্মী ছিলেন, কোনো এমএলও ছিলেন না, কোনো মন্ত্রীও ছিলেন না। দিলীপ ঘোষ পুরোপুরি মিথ্যা বলছেন”।

পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির প্রয়োজনে বৃহস্পতিবার বিজেপির নয়াগ্ৰাম বিধানসভার কর্মীদের নিয়ে গোপীবল্লভপুরের একটি বেসরকারি অতিথিশালায় কার্যকর্তা সম্মেলনের আয়োজন করে বিজেপি। সেই সম্মেলনে যোগ দিতে এসে দিলীপ ঘোষ একাধিক বিষয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সমালোচনা করেন।

এদিন দিলীপ ঘোষ ময়নায় বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা জানি তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে তৃণমূলের হার্মাদরা। এটা চাপা দেওয়ার জন্য তদন্ত চাপা দেওয়া হচ্ছে। ময়না তদন্ত ঠিকমতো হয়নি, তাই আমরা কোর্টে গিয়েছি। কোর্টের নির্দেশে পুনরায় ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এসসি কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন এসে গিয়েছে। তিনি এসে ওখানকার এসপিকে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন। এখানকার রাজ্য সরকার হিংসায় মদত দিচ্ছে, তার অফিসাররাও হিংসায় মদত দিচ্ছে। তাই দোষীদের ধরা হচ্ছে না কেস করা হচ্ছে না, সেই জন্য আমরা বার বার কোর্টে গিয়ে সিবিআই তদন্ত চাইছি। আপনারা জানেন রামনবমীর শোভাযাত্রায় পাথর মারা হয়েছিল। সেটা চেপে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। এখন এনআইএ তদন্ত চলছে। একাধিক মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চলছে। কোথাও সিআইডি তদন্ত বা সিট তৈরি করার কথা হচ্ছে। এই সরকার হিংসা করছে আর হিংসাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেগুলো ধীরে ধীরে বিভিন্ন তদন্তে বেরচ্ছে”।

কালিয়াগঞ্জের ঘটনা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনাদের অভ্যাস রয়েছে কোনো ঘটনা ঘটলে তার তদন্ত না করেই কোনো একটা ঘোষণা করে দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। কালিয়াগঞ্জের যে কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল, তার মৃত্যু নিয়ে ওখানকার ওসির দোষী গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। তা সত্ত্বেও ওসি বলছেন মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কলকাতা থেকে মন্ত্রী বলে দিয়েছে আত্মহত্যার ঘটনা। জিনিসটাকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত সবসময় হয়। যেহেতু তদন্ত চলছে। তদন্ত হোক সত্য সামনে আসুক”।

এছাড়াও, গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লকের গোপীবল্লভপুর ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কেন্দ্রীয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থে নির্মিত একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দিলীপ ঘোষ। বাগসাই গ্রামের গোপেশ্বর জিউ শিব মন্দিরের নবনির্মিত মুখচালা, মন্দিরের গেট, এবং স্থানীয় একটি হাটচালার উদ্বোধন করেন তিনি। এদিনের উদ্বোধনী কর্মসূচিতে দিলীপ ঘোষ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন গোপীবল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অম্বিকা বেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.