‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকে নবান্ন অভিযানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে অশান্তির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। বর্ধমানের বিডিও অফিসের সেই কর্মীকে এ বার সাসপেন্ড করা হল। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত জেলাশাসকের চিঠি তুলে দেওয়া হয়েছে শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। নবান্ন অভিযানে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল হাওড়া থানার পুলিশ। জেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘বেআইনি’ বলে মন্তব্য করেছেন শুভঙ্কর।
দুর্গাপুরের কাঁকসার বিডিও অফিসের নির্বাচনী কার্যালয়ের কর্মী শুভঙ্কর। বর্ধমানের জেলা সংগ্রামী যৌথমঞ্চের আহ্বায়ক তিনি। গত ২৭ অগস্ট আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ যে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল, তাতে যোগ দিয়েছিলেন শুভঙ্কর। বৃহস্পতিবার তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। জেলাশাসকের চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত ২৮ অগস্ট থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত শুভঙ্কর সাসপেন্ড থাকবেন।
নবান্ন অভিযানের দিন গ্রেফতার হয়ে পরে জামিন পেয়ে যান শুভঙ্কর। গত ৩ সেপ্টেম্বর তিনি আবার কাজে যোগ দেন। অভিযোগ, তাঁকে দু’বার কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনের পথে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শুভঙ্কর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি অফিসে আসার পরে আমাকে ডাকা হয়। জানানো হয়, আমার নামে সাসপেন্ড অর্ডার রয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ২৮ তারিখ থেকে আমাকে সাসপেন্ড করা হল। যে হেতু ২৭ তারিখের নবান্ন অভিযানে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাই এই নির্দেশ। আমি মনে করি, এই নির্দেশ বেআইনি। এটা বেআইনি সরকারের বেআইনি কাজকর্ম। আমি আইনের পথে চলব। উকিলের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সত্যি কথা বলছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছি। তাই আমাদের এ ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এ সব আন্দোলন দমিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত। এতে আমরা ভয় পাচ্ছি না। আমরা সত্যের পথে চলি। বেআইনি ভাবে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আইনের পথে লড়াই চলবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। আরজি করের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। সেখানে কী ভাবে গ্রেফতার করা হয়, সাসপেন্ড হয়, সেটা আদালতই বুঝে নেবে।’’
শুভঙ্করের সাসপেনশনের চিঠিতে নবান্ন অভিযানের উল্লেখ নেই। তাতে বলা হয়েছে, হাওড়া থানার অন্তর্গত একটি মামলায় গত ২৮ অগস্ট শুভঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি কাঁকসার বিডিও অফিসের কর্মী। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে। তিনি ১২০ ঘণ্টা পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। তাই তাঁকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পুনমবালম বলেন, ‘‘ওই বিডিও কর্মী গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। তাই নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’