বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যে ক্রমাগত কমেছে বিজেপির ভোট শতাংশ। শাসকের ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগে ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে বহু পার্টি অফিসের। কিন্তু উল্টো ছবি আরএসএসের। সঙ্ঘের দাবি, এই সময়ের মধ্যে বাংলায় তাদের শাখার সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। তৃণমূল বিষয়টিকে আমল দিতে চায়নি। সিপিএম অবশ্য মনে করে, রাজ্যে তৃণমূলের জমানা থাকার ফলেই আরএসএস এতটা বেড়ে ওঠার রসদ পেয়েছে।
প্রতি বছর দীপাবলির আগে আরএসএসের বার্ষিক বৈঠক হয়। এ বছর ১৫-১৮ অক্টোবর প্রয়াগরাজে সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যে সঙ্ঘের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট নেয় নাগপুর। সূত্রের খবর, গত এক বছরে সাংগঠনিক বিস্তারের যে চিত্র বাংলায় উঠে এসেছে তাতে খুশি সঙ্ঘ চালকরা। পাশাপাশি সামাজিক কাজের গতিও বেশ খানিকটা বেড়েছে। আরএসএসের পূর্ব ক্ষেত্র সঙ্ঘচালক অজয় নন্দী বলেন, “নির্দিষ্ট সংখ্যাটা আমরা দীপাবলি বৈঠকের পরই জানতে পারব। তবে শুধু শাখার সংখ্যাই রাজ্যে ২৫ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে সামাজিক কর্মসূচিগুলিও।” কারণ হিসেবে তাঁর দাবি, “আমাদের কাজকর্ম অনেক বেশি মাঠে ময়দানে। তাই অতিমারির কারণে আমাদের কিছু শাখা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। অনেকে বসে গিয়েছিলেন। এখন নতুন করে আমরা অনেক শাখা খুলেছি। অনেকে নতুন যোগ দিয়েছেন।”
অজয়বাবুর দাবি, রাজ্য জুড়েই এই বৃদ্ধি হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, এই সংখ্যাটা ব্যাপক সংখ্যায় বেড়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলির উত্তরাংশ ও হাওড়া গ্রামীণ এলাকায়। এদিকে বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ শিবির।
যে হেতু বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই পরিস্থিতি বাংলায় সঙ্ঘের এমন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি গ্রামীণ রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘ইতিবাচক’ ফলাফলের পিছনে সঙ্ঘ এবং সমমনস্ক সংগঠনগুলির সক্রিয়তা ছিল বলে মনে করা হয়। যদিও সঙ্ঘের তরফে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, তাদের কাজ সারা বছরের। কবে কোন নির্বাচন আসছে, সেটা মাথায় রেখে তারা সঙ্ঘ পরিচালনা করে না। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “সঙ্ঘের একটা আদর্শগত প্রভাব রয়েছে। যার প্রভাব পরোক্ষ ভাবে রাজনীতিতে পড়ে। কিন্তু রাজ্যে আমাদের ভাল ফল করতে হলে আমাদের লড়াই-আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। না হলে সঙ্ঘ শক্তিশালী হলেও আমাদের লাভ হবে না।”