প্রায় দেড় দশক পরে আবার সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কের টহলদারি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হিংসা ঠেকাতে শুক্রবার রাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কার্ফু জারি করে সেনা তলব করেছিল। গভীর রাত থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় নেমে পড়ে বাংলাদেশ সেনার সাঁজোয়া ব্রিগেড।
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। যার জেরে গোটা বিশ্বের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশটি। সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভের ঝাঁজ শুক্রবার আরও বেড়ে গিয়েছিল। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। বিরোধী বিএনপি এবং নিষিদ্ধ জামাতের সশস্ত্র কর্মীরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সেনার ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ঢাকায় সেনা ট্যাঙ্কের এই টহলদারি উস্কে দিয়েছে ২০০৯ সালের রক্তাক্ত বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) বিদ্রোহের স্মৃতি। হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যেই ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা ব্যারাকে এই বিদ্রোহ করেছিল সে দেশের সীমান্তরক্ষী বিডিআর বাহিনী। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আরও কয়েকটি বিডিআর ক্যাম্পে। পিলখানায় বিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানেরা ৭৪ জনকে হত্যা করেছিলেন। যার মধ্যে ৫৭ জনই ছিলেন বিডিআর-এর দায়িত্ব পালন করতে ডেপুটেশনে আসা সেনা অফিসার। অফিসারদের মেসে লুটপাটও করেছিলেন বিদ্রোহী জওয়ানেরা। খুন করা হয় কয়েক জন অফিসারের স্ত্রী এবং পরিজনকেও। পরে বিডিআর-এর নাম বদলে হয় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)।
সেই সময় পরিস্থিতি সামলাতে ঢাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল সেনা। আর্মাড রেজিমেন্ট সাভার সেনানিবাস থেকে আনা হয়েছিল ট্যাঙ্ক। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) জঙ্গিরা গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালালে তাদের মোকাবিলায় সাঁজোয়া গাড়ি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ঢাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সামগ্রিক ভাবে সেনার দখলে যায়নি।