ভোট ঘোষণার আগে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার ২ মাস আগে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। মূলত রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে এবং ভোটারদের মনে আস্থা বাড়াতেই ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তাই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার আগে সেনা বাহিনী মোতায়েন করা নতুন কোনও ঘটনা নয়।
এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবতীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “সেনা বাহিনী ভোটের আগে মোতায়েন করা হয় মূলত ভোটারদের মনে আস্থা ফেরাতে। তারা বিভিন্ন এলাকায় টহল দেয়। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং ভোটারদের আশ্বস্ত করতে নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা রুটিন মাফিকই হয়েছে।”
তবে কেন ভোট ঘোষণার আগেই রাজ্যে সেনা মোতায়েন করা হলো সেটা নিত্য রাজ্যের শাসক দলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এদিকে রাজ্যের শাসক বিরোধী দলের তরফে এই সেনা মোতায়েনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে স্বাগাত জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে মূলত এবার রাজ্যের ১০০% বুথকেই স্পর্শকাতর ধরেই নির্বাচন পরিচালনা করা হবে। তাই আগে থেকে কমিশন চাইছে রাজ্যে শান্তির বাতাবরণ তৈরী করে নির্বাচন পরিচালনা করতে। বীরভূম জেলায় ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচন , ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচন খুব শান্তিতে হয়নি। তাই বীরভূমে এবার সর্বপ্রথম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল প্রত্যেক বারই নির্বাচনের আগে বিশেষ বিশেষ শব্দবন্ধ আবিষ্কার করেন। এবার তিনি “খেলা হবে” শব্দবন্দ ২০০২১-এর বিধানসভা নির্ব্বাচনের আগে বাজারে ছেড়েছেন। এই খেলা হবে স্লোগান নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র স্বরে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে খেলা হবে-র রিমিক্স চালিয়ে নিয়ে প্রচার চলছে শাসকদলের তরফে।
তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাই খেলা হবে স্লোগানকে ব্যবহার করছেন বিভিন্নভাবে । পাল্টা বিজেপিও খেলা হবে বলে স্লোগান দিচ্ছে। রাজ্য রাজনীতিতে এই ধরণের স্লোগান এর আগে খুব একটা শোনা যায়নি। তাই এই খেলা হবে স্লোগান রাজনীতিকে সন্ত্রাসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদের মত।
সমাজকর্মী মিরাতুন নাহার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “সেনা বাহিনী আসলে মানুষের ভরসা বাড়ে। রাজ্যে যে ধরণের খেলা হবে স্লোগান চলছে তাতে রাজ্যের নির্বাচন পরিস্থিতি সত্যিই আতঙ্কের হয়ে উঠছে। সেনারা যদি মানুষের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে পারে সেটাই কাম্য।”