আড়িয়াদহের ভাইরাল ভিডিও কান্ডে বৃহস্পতিবার মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়িয়াদহের ত্রাস জায়েন্ট সিং ওরফে জয়ন্ত সিং এর সঙ্গে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং- এর নাম জড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকেশ আম্বানির ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মুম্বাই যাবার আগে কলকাতা বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “২০২১ সালের ঘটনা নিয়ে তাঁর ইলেকশন ড্যামেজ করার জন্য গত ৭২ ঘণ্টা ধরে একতরফাভাবে একই খবর দেখানো হয়েছে। অথচ সেই সময়টা ওখানকার সাংসদ ছিলেন অর্জুন সিং। এমনকি যারা ঘটনায় অভিযুক্ত, তারা কিন্তু গ্রেপ্তার হয়ে এখনও জেলে আছে। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এবার সেই সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মিথ্যুকবাজ বলে কটাক্ষ করলেন অর্জুন সিং। এদিন সকালে নিজের বাসভবনে বসে সাংবাদিকদের বলেন, জয়ন্ত সিং- এর বাড়বাড়ন্ত প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে অর্জুন সিং বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার নাম এই ঘটনায় মিথ্যে মিথ্যে জড়াচ্ছেন। উনি মিথ্যে কথা বলেন। তিনি কোথাকার এমপি ওনার জানা উচিত। কোন লোকসভায় কোন বিধানসভা পড়ে সেটা মুখ্যমন্ত্রীর জানা উচিত।
ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের কটাক্ষ, বাংলার মানুষের দুর্ভাগ্য আড়িয়াদহ কোন লোকসভা অন্তর্গত, আর কোন বিধানসভার মধ্যে পড়ে, তা উনি জানেন না। আড়িয়াদহ ব্যারাকপুর নয়, দমদম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। জয়ন্ত সিং- এর সাথে যেহেতু আমার নামের মিল আছে তাই জুড়ে দিচ্ছেন।” প্রাক্তন সাংসদের কথায়, আসলে তিনি বিজেপির হয়ে লড়াই করেন বলেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নাম নিয়েছেন। যাতে নতুন করে কিছু মামলায় তাঁকে ফাঁসানো যায়। তাঁর অভিযোগ, “জয়ন্ত সিং- এর মত লোকেদের এতো ক্ষমতা হয়েছে তৃণমূলের একাংশের মদতে। যার ফলে এই রাজ্যে তালিবানি শাসন শুরু হয়েছে। মদন মিত্র এই জয়ন্ত সিং- দের মাধ্যমে একটা চক্র চালায় যারা জমি দখল ও তোলাবাজি করে বেড়ায়।”
আড়িয়াদহে এমন অনেক বন্ধ কারখানা আছে যেগুলো ভয় দেখিয়ে এই জয়ন্ত সিং ও তার দলবল তৃণমূল নেতাদের সাথে মিলে দখল করে নিয়েছে। আর এই ভাবেই ওদের প্রভাব প্রতিপত্তি দিনদিন বেড়েই চলেছে। আর পুলিশ প্রসাশন নির্বিকার।”
অপর দিকে এদিন তদন্তের স্বার্থে আড়িয়াদহের ত্রাস জয়ন্ত সিং’কে তার যে আখড়া ছিল সেই তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে নিয়ে আসা হয়। ক্লাবের ভেতর থেকে বসেই যাবতীয় কু-কীর্তি সম্পন্ন হতো বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সেই অভিযোগ অনুযায়ী জয়ন্তকে নিয়ে ক্লাবে পুননির্মাণ করল পুলিশ। এদিন বেলায় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত বেলঘরিয়া থানার পুলিশ ও এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসাররা জয়ন্ত সিং’কে নিয়ে আসে এবং ক্লাবের ভেতরে দরজা দিয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ চালায় বলে সূত্রের খবর।