মামা ধরা পড়েছেন, কিন্তু তিন ভাগ্নে কোথায়? এই প্রশ্নটাই এখন ভাবাচ্ছে সিআইডি-কে। গরু পাচারে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ার পরে তাঁর তিন ভাগ্নের অফিস, চালকল ও হোটেল থেকে প্রচুর নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এনামুলের ওই তিন ভাগ্নে কী ভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছেন, তা জানতে গোয়েন্দারা ফরেন্সিক অডিটের সাহায্য নিতে চান। সিআইডি সূত্রের খবর, তিন ভাগ্নে দেশের বাইরে কোথাও গা-ঢাকা দিয়ে আছেন।
এনামুলের তিন ভাগ্নের বিপুল অর্থের উৎস জানার জন্য তাঁদের সংস্থার কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনও সূত্র পায়নি সিআইডি। ওই টাকার উৎস খুঁজতে তাঁদের বিভিন্ন অফিসে পাওয়া নথি ও তথ্য খতিয়ে দেখছেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা। কিন্তু তা থেকেও যদি অর্থের উৎস জানা না-যায়, সে-ক্ষেত্রে ফরেন্সিক অডিটের সাহায্য নেবে সিআইডি। এক তদন্তকারী জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। এনামুলের ওই তিন আত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠিয়ে চলতি সপ্তাহে ভবানী ভবনে আসতে বলা হয়েছে। তাঁদের হোটেল, চালকল, অফিস-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন তদন্তকারীরা।
রাজ্য পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদ দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচারের স্বর্ণ-সময় ছিল ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল। ওই সময় মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন থানায় সাতশোর বেশি গরু পাচারের মামলা দায়ের হয়েছিল। এবং তার বেশির ভাগই বিএসএফের দায়ের করা। তার বাইরে পুলিশ এবং শুল্ক দফতরও বিভিন্ন থানায় গরু পাচারের মামলা দায়ের করেছিল।
পুলিশি সূত্রের খবর, বীরভূম থেকে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ-সুতি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার করা হত বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। তার জন্য ব্যবহার করা হত একটি চিরকুট। সেটি দেখালেই মিলত ছাড়পত্র। সেই সঙ্গে কোন গরুটে কার, তা-ও ওই চিরকুটের মাধ্যমে চিহ্নিত হত। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই চিরকুট বা ‘সাপ্লাই চেন’ নিয়ন্ত্রণ করত এনামুলের মতো বেশ কয়েক জন। প্রতি ব্লকে বা নির্দিষ্ট এলাকায় ওই কারবার দেখার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকত এক-এক জনের উপরে। পুলিশ, শুল্ক বা বিএসএফকে ‘ম্যানেজ’ করার কাজ করত তারাই।