বিচারপতির নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দেবেন অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। সেই মতো বৃহস্পতিবার ভোরে বোলপুরের বাড়ি থেকে তিনি রওনা দেবেন। সুকন্যার সঙ্গে তাঁর আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ-ও থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, সঞ্জীব অনুব্রতেরও আইনজীবী।
গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত। ওই মামলায় তাঁর মেয়ে সুকন্যারও নাম জড়িয়েছে। এর মধ্যেই এ বার বেআইনি ভাবে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে অনুব্রত-কন্যার বিরুদ্ধে। হাই কোর্ট তাঁকে তলব করেছে বৃহস্পতিবার। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সুকন্যাকে বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বেরোতে দেখে অনেকে ভেবেছিলেন, আদালতে হাজিরা দিতেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি। যদিও সুকন্যা-ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র দাবি করে, কলকাতার উদ্দেশে নয়, সন্ধ্যায় গাড়ি নিয়ে অন্য কাজে বেরিয়েছেন সুকন্যা। কলকাতায় আসার জন্য তিনি হয়তো বৃহস্পতিবার ভোরেই বোলপুর নিচুপট্টির বাড়ি থেকে বেরোবেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে যদিও তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।
বুধবার সুকন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে উচ্চ আদালতে। অভিযোগ— টেট না দিয়ে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়। সুকন্যার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি নাকি কোনও দিন স্কুলেই যাননি! বাড়িতে বসেই বেতন পেতেন। স্কুলের রেজিস্টার খাতা তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির বাড়িতে নিয়ে আসা হত তাঁর মেয়ের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। আদালতে অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে এই অভিযোগ তোলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। এর পরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ সুকন্যাকে তলব করে।
আদালতে ফিরদৌসের দাবি, শুধু সুকন্যাই নন, অনুব্রতের ভাইপো সুমিত মণ্ডল-সহ তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ মোট ছ’জন টেট না দিয়েই চাকরি পেয়েছেন। এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, সুকন্যা-সহ ছ’জনকে টেট পরীক্ষায় পাশ করার সার্টিফিকেট নিয়ে আদালতে হাজির হতে হবে। তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও দ্রুত নগেন্দ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুকন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও সুমিতের দাবি, তাঁর কাছে আদালতের কোনও নির্দেশ এখনও এসে পৌঁছয়নি। পাশাপাশি, তিনি জানান, তাঁর কাছে টেট পাশের শংসাপত্রও রয়েছে।