গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে পুনরায় জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। বুধবার অনুব্রতের জামিনের আর্জি খারিজ করেন আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ৫ অক্টোবর। আসানসোল সিজিএম আদালতে ওই শুনানি হবে। অর্থাৎ, এ বার অনুব্রতের দুর্গাপুজো কাটবে সংশোধনাগারেই।
বুধবার আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা তাঁদের মক্কেল অনুব্রতের জামিনের আবেদন করেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, গরু পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্তদেরই জামিন মুকুব হয়েছে। কেউ ৩২ দিন, কেউ ৩৩ দিন জেলে থেকেছেন। কারও বিনা জেল হেফাজতেই জামিন হয়েছে। আদালতে অনুব্রতের আইনজীবীরা সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, গরু পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক, বিএসএফ আধিকারিক সতীশ কুমার, এনামুলের স্ত্রী রশিদা বিবি, বিকাশ মিশ্র, শেখ আব্দুল লতিফ, আনারুল শেখ, তানিয়া সান্যাল, বাদল সান্যালের মতো অনেকেরই জামিন হয়ে গিয়েছে। আইনজীবীদের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাচার করেন বলে অভিযোগ, তাঁদের জামিন হয়ে গিয়েছে। আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, যিনি শুধু মাত্র বীরভূম থেকে মুর্শিদাবাদে গরু নিয়ে যেতেন, তিনি থাকছেন জেলে!’’
এর পর অনুব্রতের শারীরিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে জামিনের আবেদন করেন তাঁরা। অনুব্রতের আইনজীবীরা সওয়াল করেন, সংশোধনাগারে শৌচাগারের অবস্থা খারাপ। অনুব্রতের খাওয়া-দাওয়াও ঠিক মতো হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিই ৬৫ বছর বয়সি অনুব্রতের শরীর আরও খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
অন্য দিকে, সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার বলেন, ‘‘দুটো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে প্রচুর টাকা লেনদেন হয়েছে। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রচুর টাকা দেওয়া-নেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে প্রচুর কলেজ তৈরি হয়েছে। এই রাজ্য ছাড়া ভিন্রাজ্যেও হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, এই সব তথ্যই লিখিত আকারে বিচারককে দেওয়া রয়েছে। তিনিই সমস্ত দিক বিবেচনা করে দেখুন। পাশাপাশি, অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই আবারও প্রভাবশালী-তত্ত্ব আনে। আদালতে তাদের দাবি, অনুব্রত এতটাই প্রভাবশালী যে বাইরে বেরোলে বিভিন্ন ভাবে তদন্তের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেন। দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।