ঘরের কাজের অপরিহার্য জিনিস, কিন্তু তাতেই দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ল শিশুকন্যা

কাপড় কাচার সাবান অন্ধত্বের কারণ হয়ে উঠল! এমন ঘটনাই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে। চোখে তরল ডিটারজেন্ট ঢুকে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হল চার বছরের এক শিশুকন্যার। মেয়েটির মা জানিয়েছেন, এক চোখে আর দেখতে পাচ্ছে না তাঁর মেয়ে। যদিও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পরে দৃষ্টি ফেরানো যাবে। আপাতত হাসপাতালে ভর্তি শিশুটি।

রোজের মতোই ওয়াশিং মেশিনে জামাকাপড় কাচার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মহিলা। শিশুটি আশপাশেই ছিল। মহিলা জানিয়েছেন, মেয়েটি নিজেই ডিটারজেন্টের বোতল খুলে মেশিনের ভিতরে তরল সাবান ঢালতে যায়। আর তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। বোতলটি পড়ে গিয়ে কিছুটা সাবান মেয়েটির একটি চোখে ঢুকে যায়। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে শিশুটি। এর পরেই দেখা যায়, চোখ ফুলে লাল হয়ে উঠেছে। সেই চোখের দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে যায়।

হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে চিকিৎসকেরা জানান, সাময়িক ভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে শিশুকন্যাটি। অস্ত্রোপচার ছাড়া দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব নয়। চিকিৎসকেরা জানান, সাবান ঢোকার পরে মেয়েটি বেশি করে চোখ ঘষতে শুরু করেছিল। ফলে সাবান কর্নিয়ায় ঢুকে গিয়ে বিপত্তি বাধায়। চোখের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কোষগুলিও ছিড়ে যায়। ‘অ্যামনিওটিক মেমব্রেন ট্রান্সপ্ল্যান্ট’ করেই তার দৃষ্টিশক্তি ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

কাপড় কাচার সাবান যে চোখের জন্য ক্ষতিকর, সে ধারণা নেই অনেকেরই। উদ্বেগের ব্যাপার হল, কাপড় কাচার সাবান চোখে ঢুকে দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার ঘটনা কিন্তু বাড়ছে। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অপথ্যালমোলজি’-র একটি গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, তরল সাবানে এমন সব রাসায়নিক থাকে, যা থেকে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সাবান চোখে ঢুকলে কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চোখের ভিতরে জ্বালা শুরু হয়, চোখ ফুলে ওঠে এবং দৃষ্টি ঝাপসা হতে শুরু করে। রাসায়নিক মেশানো সাবান অন্ধত্বের কারণও হয়ে উঠতে পারে।

কী ভাবে সাবধান থাকবেন?

তরল সাবান ঢালার সময়ে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে হাতে লেগে থাকা সাবান চোখে না ঢোকে।

সাবান কোনও ভাবে চোখে ঢুকে গেলে চোখ ঘষবেন না, বারে বারে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন।

খেয়াল রাখা জরুরি, চোখে জল দেওয়ার সময়ে যেন হাত থেকে সাবান আবারও না চোখে ঢুকে যায়।

জলের ঝাপটা দেওয়ার পরে মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে হবে, তাতেও জ্বালা না কমলে যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.