বিচারপতিদের মধ্যে আমিই মনে হয় সবচেয়ে বেশি কটাক্ষের শিকার, বিদায়ী বার্তায় বললেন চন্দ্রচূড়

দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে সময় শেষ ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের। আগামী রবিবার, ১০ নভেম্বর অবসর নেবেন তিনি। শুক্রবার বিদায়ী বক্তৃতায় তিনি বলেন, “দেশের বিচারপতিদের মধ্যে আমাকেই মনে হয় সবচেয়ে বেশি কটাক্ষ করা হয়েছে। যাঁরা কটাক্ষ করেছেন সোমবার থেকে তাঁদের হাতে আর কোনও কাজ থাকবে না।”

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বার অ্যাসোসিয়েশন। সেই অনুষ্ঠানে আইনজীবীদের পাশাপাশি অন্য বিচারপতিরাও উপস্থিত ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় প্রধান বিচারপতি তাঁর সকল সহকর্মী এবং বার আসোসিয়েশনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যে সকল পদক্ষেপ করার চেষ্টা করেছি, তা প্রয়োগ করার জন্য বার অ‍্যাসোসিয়েশন সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে।” সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কী ভাবে দুই দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীকে রাজস্থানের জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, অন‍্য একটি মামলায় কী ভাবে ডাক্তারির এক ছাত্র শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও পড়ার সুযোগ পেয়েছিল, এ সব উদাহরণ তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি সকলকে বুঝিয়ে দেন যে কী ভাবে এক জন বিচারপতি সাধারণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারেন।

এর পরেই নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনও গোপনীয়তা ছিল না। সেই জন্য আমায় কম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়নি, কম কটাক্ষের শিকার হতে হয়নি। বিশেষ করে সমাজমাধ্যমে। দেশের বিচারব্যবস্থায় আমি মনে হয় একমাত্র ব্যক্তিত্ব এবং বিচারপতি যাঁকে সবচেয়ে বেশি কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। ভাবছি, যাঁরা আমায় কটাক্ষ করেছেন সোমবার থেকে তাঁদের হাতে আর কোনও কাজ থাকবে না।”

সুপ্রিম কোর্টে জমতে থাকা মামলা নিয়েও চিন্তা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, শেষ দু’বছরে ১১ হাজার মামলার বোঝা কমেছে। প্রায় ২১ হাজার জামিন মামলার নিষ্পত্তি হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবারের বিদায়ী মঞ্চে বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার হাতে ‘মশাল’ তুলে দেন চন্দ্রচূড়। বিচারপতি খন্নার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধান বিচারপতি। তাঁকে যোগ্য নেতা বলেও অভিহিত করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।

২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ইলাহাবাদ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে থাকার পর সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত হন চন্দ্রচূড়। ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দেশের ৫০তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেন তিনি। তাঁর পরে আগামী সোমবার দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেবেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। তবে প্রধান বিচারপতি হিসাবে তাঁর মেয়াদ মাত্র ছ’মাস। আগামী বছর ১৩ মে অবসর নেবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.