রাজ্যে কিছু ঘটলেই সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুললেও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব যে তা আমল দিতে রাজি নন তা স্পষ্ট করে দিলেন অমিত শাহ। দলের সাংগঠনিক বৈঠকে অমিত বলেন, ‘‘দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে বসে না থেকে নিজেদের লড়াই নিজেরা লড়ুন। প্রয়োজনে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে।’’ মনে করিয়ে দেন যে, রাজ্যে বিজেপি এখন বিরোধীর আসনে রয়েছে। বিজেপি রাজ্য নেতাদের বক্তব্য ছিল, বাংলায় বল্গাহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। সরাসরি এর জবাব না দিলেও অমিত বৈঠকে বলেন, এখন যারা শাসক তারাও তো বিরোধী আসনে ছিল। তাদেরও বিরোধী হিসাবে অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়েছে।
শুক্রবার দুই দফায় সাংগঠনিক বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও একটি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন অমিত। কথা ছিল প্রথমে বিজেপির জেলা সভাপতি স্তর পর্যন্ত নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক হবে। এর পরে দলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে হবে আরও একটি বৈঠক। কিন্তু কাশীপুরের ঘটনাস্থল থেকে ফিরে অমিতের হাতে দু’টি বৈঠকের সময় ছিল না। একসঙ্গে সকলকে নিয়ে বৈঠক হয়। তবে সেখানে কারও কোনও প্রশ্ন করা বা অভিযোগ জানানোর সুযোগ ছিল না বলেই বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। অমিত ছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ।
তবে সকলেরই নজর ছিল শাহের বক্তব্যের দিকে। জানা গিয়েছে, খুব বেশি ক্ষণ বলেননি শাহ। ছোট বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন, রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করতে হলে দিল্লির উপরে নির্ভরতা কমাতে হবে। নেতা থেকে কর্মীদের যাতে লড়াইয়ের মানসিকতা থাকে সে ব্যাপারে জোর দেওয়ার কথাও তিনি বলেন। একই সঙ্গে শাহর নির্দেশ, বুথ স্তরে শক্তি বিস্তার করতে হবে। বুথ কমিটি গড়ার কাজে আরও বেশি করে জোর দিতে হবে। রাজ্যে বিরোধী দলের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সব সময় রাজ্যের পাশে থাকবেন। অমিত বলেন, ‘‘আমি আগামিদিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না-ও থাকতে পারি। কিন্তু কথা দিচ্ছি, এক জন বিজেপি কর্মী হিসেবে বাংলার লড়াইতে সব সময়ে থাকব।’’ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে তিনি যে মাঝেমাঝেই বাংলায় আসবেন সে কথা জানিয়ে অমিত বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনে রাজ্যে ভাল ফল করতেই হবে। তার জন্য লড়াইয়ের মানসিকতা থাকা দরকার। যাঁরা ভাবছেন এমনি এমনিই সব হয়ে যাবে তাঁরা ঘরে বসে থাকুন।’’
নিউটাউনের হোটেলে অমিত দেরিতে পৌঁছলেও শুক্রবার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন সন্তোষ। পরে অমিতের উপস্থিতিতে তিনি রাজ্যের সংগঠন এবং পরিষদীয় দলের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দেন। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কর্মসূচি তৈরি করা এবং লড়াইয়ের ময়দানে থাকার কথা বলেন তিনি।