নীলবাড়ির লড়াইয়ে যুব সমাজকে বেশি করে পাশে পেতে এ বার ডিজিটাল মঞ্চের সূচনা করল বিজেপি-ও। সপ্তাহদুয়েক আগেই প্রায় একই ধাঁচের কর্মসূচির সূচনা তৃণমূল করেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে। নাম ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’। তাই শনিবার বিজেপি যে ‘নমো যুবা যোদ্ধা’ কর্মসূচি ঘোষণা করল, তাকে অনেকেই তৃণমূলের ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’র পাল্টা বলে মনে করছেন। বিজেপি নেতৃত্ব যদিও নিজেদের এই কর্মসূচিকে কারও পাল্টা বলে মানতে নারাজ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে (নমো) যুব সমাজকে ডিজিটাল সৈনিক হিসাবে কাজে লাগানোর এই কর্মসূচি যে শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্যই চালু করা হল, সে কথা বিজেপি অস্বীকার করছে না।
শনিবার কলকাতার আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে যুবমোর্চার কর্মীদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, বিজেপি সাংসদ বিপ্লবকুমার দেব, সুনীল বনসল, অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখেরা। সেখানেই এই কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া, যে সংগঠন এই কর্মসূচি রূপায়ণ করবে, সেই যুবমোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ এবং তরুণ বিধায়ক অনুপ সাহাও মঞ্চে ছিলেন।
বিজেপির দাবি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল সরকারের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং বিকশিত বাংলা গড়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। শনিবার এ সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটও প্রকাশ করেছে বিজেপি। সেখানে কেউ নিজের নাম ‘নমো যুবা যোদ্ধা’ হিসাবে নথিভুক্ত করতে পারেন। এ ছাড়া, টোল ফ্রি নম্বর ৭০১৫৯০০৯০০-এ মিস্ড কল দিলেও নাম নথিভুক্ত করা যাবে বলে জানানো হয়েছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বনসলের নির্দেশেই পশ্চিমবঙ্গে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির যে লোগো শনিবার প্রকাশিত হয়েছে, তাতেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবির পটভূমিকায় ভারতের নয়, রাখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র! অর্থাৎ এই কর্মসূচি যে মূলত বাংলাকেন্দ্রিক, তার ইঙ্গিতও মিলেছে।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ দুয়েক আগে, গত ১৭ অক্টোবর ডিজিটাল দুনিয়া তথা সমাজমাধ্যমে আরও জোরালো প্রচার চালাতে নতুন কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। সেই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’। অভিষেক জানিয়েছিলেন, আজকের যুগে রাজপথ, সংসদের মতো লড়াইয়ের ময়দান হয়ে উঠেছে ডিজিটাল দুনিয়াও। সেখানে সর্বক্ষণ বাংলা-বিরোধীদের কুৎসা ও অপপ্রচার চলছে। সে সবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য চাই ‘সৈনিক’। শাসকদলের দাবি, কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল সেই কর্মসূচি। তার দু’সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই এ বার একই রকমের কর্মসূচি ঘোষণা করল বিজেপি।

