বিরল খনিজ নিয়ে চিন যে নীতি নিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ আমেরিকা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সঙ্গে নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে একটি জোট বাঁধতে চাইছে তারা। একজোট হয়ে বেজিংকে জবাব দিতে চাইছে। এই জোটে ডাকা হবে ভারতকেও, জানালেন মার্কিন অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট। আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, এমন সব রাষ্ট্রকেই এ বিষয়ে আলোচনায় ডাকতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলোচনার পর একসঙ্গে চিনকে একটি জবাব দিতে চাইছেন তিনি। তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার জন্য চিনের বিরুদ্ধে বাড়তি শুল্ক আরোপ করতেও ওয়াশিংটন প্রস্তুত, দাবি বেসেন্টের।
বিরল খনিজের দুনিয়ায় চিনের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে বরাবর। আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশ চিন থেকে এই পণ্য কিনে থাকে। সম্প্রতি বেজিং দেশে দেশে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়েছে, তারা বিরল খনিজে রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতি কার্যকর করতে চলেছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই খনিজের রফতানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। চিনের সব পণ্যে ১০০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করে দেন। ১ নভেম্বর থেকে ট্রাম্পের সেই ঘোষণা কার্যকর হলে চিনা পণ্য মার্কিন বাজারে পাঠাতে মোট ১৩০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। বুধবার একটি সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে বেসেন্ট বলেন, ‘‘আমরা ইউরোপে আমাদের বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে কথা বলব। অস্ট্রেলিয়া, কানা়ডা, ভারত এবং এশিয়ার অন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আলোচনা করব। আমরা এর একটা সম্পূর্ণ ঐক্যবদ্ধ জবাব দিতে চাই। কারণ, চিনের লোকজন সারা বিশ্বের বাণিজ্য, উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।’’
সারা বিশ্বের ৭০ শতাংশ বিরল খনিজের অধিকারী চিন। আমেরিকা তো বটেই, ইউরোপ ও অন্যান্য দেশের বাজারেও এই বিরল খনিজের চাহিদা প্রচুর। চিনের অভিযোগ, তাদের পণ্য বিভিন্ন দেশ সামরিক খাতে কাজে লাগাচ্ছে। বিশ্ব শান্তির কথা ভেবে তাই তারা বিরল খনিজের রফতানিতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশে দেশে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে, সামরিক খাতে ব্যবহার না করলে বিরল খনিজ বিক্রি করা হবে। নচেত নয়। বেসেন্টের মতে, এই বিষয়ে ভারত ও অন্যান্য ‘বন্ধু’ দেশগুলির সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে আমেরিকা। তাঁর কথায়, ‘‘এটা চিন বনাম বিশ্ব। আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। চলতি সপ্তাহে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে আলোচনাও করব। ইউরোপীয়, ভারতীয় এবং এশীয়দের থেকে আমরা পর্যাপ্ত সহায়তা পাব বলে মনে করছি।’’
উল্লেখ্য, রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে ভারতের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। এই আবহে চিনের সঙ্গে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমেরিকার কথায় বিরল খনিজ নিয়ে ভারত আদৌ চিনের বিরুদ্ধে যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

