অমরনাথ যাত্রায় গিয়ে বিপর্যয়ের বলি বাংলার তরুণী। শুক্রবার অমরনাথ গুহার আশপাশে প্রবল বৃষ্টির পর ভেসে যায় পুণ্যার্থীদের অনেকগুলি শিবির। সেই থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা ওই তরুণী, তাঁর মা ও মামার খোঁজ মিলছিল না। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকায় ভীষণই উদ্বিগ্ন ছিলেন বাড়ির লোকজন। রবিবার ওই কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুসংবাদ পৌঁছল বাড়িতে। নবান্ন থেকে এই খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তরুণীর পরিবার। তবে নিরাপদে আছেন ছাত্রীর মা এবং মামা।
গত ১ জুলাই কাশ্মীরের উদ্দেশে রওনা দেন বর্ষা মুহুরি নামে ওই তরুণী। তারঁ সঙ্গে গিয়েছিলেন মা নিবেদিতা মুহুরি ও মামা সুব্রত চৌধুরী। বর্ষার বাবা চন্দন মুহুরি জানান, পড়শিদের ধরে বর্ষাদের দলে মোট সাত জন ছিলেন। বিপর্যয়ের দিন দুয়েক আগে মা ও মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। তার পর শুক্রবার সংবাদমাধ্যম মারফত অমরনাথ তীর্ষযাত্রীদের অনেকের মৃত্যু এবং অনেকের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পান চন্দন। তার পর থেকে অনেক বার স্ত্রী, মেয়ে ও তাঁর মামার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
শনিবার নানা সূত্র থেকেই বারুইপুরের চক্রবর্তী পাড়ার মুহুরি পরিবারে বর্ষার মৃত্যুর খবর আসছিল। কিন্তু প্রশাসনের তরফে তরুণীর মৃত্যুর নিশ্চয়তা মিলছিল না। পরে ব্লক উন্নয়ন দফতর থেকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয় বলে জানান বর্ষার দাদা স্বরূপ মুহুরি। তিনি বলেন, ‘‘নবান্ন থেকে বিডিও মারফত আমাদের কাছে একটি তালিকা আসে। ওই তালিকায় বর্ষার নাম শুরুতেই ছিল। আমাদের জানানো হয়েছে, বিপর্যয়ের সময় বর্ষার মা আঘাত পেয়েছিলেন। মাকে বাঁচাতে গিয়েই প্রবল স্রোতে বর্ষা ভেসে গিয়েছে বলে শুনেছি।’’ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে বর্ষার মা ও মামাও আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে।
রবিবারই বর্ষার দেহ কলকাতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় কাউন্সিলর বিকাশ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্পিকার সাহেবের (বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ওই এলাকার বিধায়ক) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। উনি মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো এখান থেকে অমরনাথে যাওয়া গোটা দলটাকেই উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্ষার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। দেহও মা ও মামার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওঁরা বিমানের অপেক্ষায় রয়েছেন।’’